চলমান সংকটে কাতারে চাকরি হারানোর শঙ্কায় বাংলাদেশিরা

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটের জেরে কাতারে চাকরি হারানোর শঙ্কা করছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। তারা বলছেন, কাতারের সংকট অব্যাহত থাকলে হয়তো তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। তবে চাকরি হারানোর শঙ্কায় শুধু বাংলাদেশিরাই করছেন না; ভারতীয় প্রবাসীরাও একই ধরনের শঙ্কায় রয়েছেন।

কাতারে ভারতীয় শ্রমিক অজিত বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির কাজ করেন। মাত্র সাত মাস আগে দেশটিতে তিনি নতুন কাজ নিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি অত্যন্ত চিন্তিত। কাতারে তার মতো আরো প্রচুরসংখ্যক প্রবাসী অভিবাসী শ্রমিক উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।

তিনি শুধু চাকরি হারানোর শঙ্কাই করছেন না বরং তার ভবিষ্যৎ ও খাবারের দাম নিয়েও শঙ্কিত। বার্তাসংস্থা এএফপিকে অজিত বলেন, এটা যদি অব্যাহত থাকে; তাহলে আমাদের মতো শ্রমিকরা সমস্যায় পড়বে। খাবারের দাম বাড়বে এবং কোনো কাজ থাকবে না।

গত ৫ জুন সৌদি আরবের নেতৃত্বে মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। পরে সম্পর্ক ছিন্নের এই তালিকায় যোগ দেয়, লিবিয়া, ইয়েমেন, জর্ডান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ। দেশগুলো কাতারের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে সমর্থন ও অর্থায়নের অভিযোগ করেছে। তবে কাতার এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।

অজিত মাসে এক হাজার রিয়াল উপার্জন করেন। এর মধ্যে পরিবারের সদস্যদের জন্য ৬০০ রিয়াল পাঠিয়ে দেন। তবে কাতার সংকট চলতে থাকলে হয়তো এই অর্থ আর পাঠাতে পারবেন না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

অজিতের পাশে দাঁড়ানো বাংলাদেশি শ্রমিক অনিল। ৩২ বছর বয়সী অনিল সূর্যের প্রখরতা থেকে বাঁচতে মুখোশ পড়েছেন। দোহার উপকেণ্ঠ শেরেইব শহরে ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন অনিল। দেশটিতে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন উপলক্ষ্যে ক্যাফে, হোটেল ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নির্মাণযজ্ঞ চলছে। বাংলাদেশি ওই শ্রমিক সেখানে নির্মাণ কাজ করে আসছেন।

অনিল বলেন, ‘প্রত্যেকেই এই সমস্যা (সংকট) সম্পর্কে আলোচনা করছে। অনেকেই বলছেন, তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।’