কার্গো পণ্য পরিবহনে বিমানের শেষ পরীক্ষা

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আকাশপথে পণ্য পরিবহনে (কার্গো) নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাজ্য। তবে এয়ার কার্গো সিকিউরিটি (এসিসি-৩) সনদ নবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ইউরোপে কার্গো পরিবহনের সুযোগ পাচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে এটিই বিমানের জন্যে শেষ ধাপ বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে বিমানের কার্গো পরিবহনে নিরাপত্তার বিষয়টি পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য। এ প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদন সন্তোষজনক হলে দেশটিতে বিমানের কার্গো পরিবহনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এয়ার কার্গো সিকিউরিটি-৩ (এসিসি-৩) সনদ নবায়ন করা হবে। সোমবার থেকে এ পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপিয়ান এভিয়েশন সিকিউরিটি এজেন্সির অডিটর জেনি ডেভ কার্গো তিনদিন ধরে কার্গো পরিবহনে বিমানের নিরাপত্তার বিষয়গুলো পরিদর্শন করবেন। সোমবার শুরু হওয়া এ পরিদর্শন কার্যক্রম বুধবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

কার্গো পরিবহন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের অন্যতম আয়ের উৎস। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান মুনাফা অর্জন করলেও গত অর্থবছর থেকে কমেছে সংস্থাটির নিট মুনাফা। ১৯ ডিসেম্বর বিমানের দশম বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী অনুমোদিত হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, কার্গো পরিবহনে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিমানের মুনাফায় প্রভাব পড়েছে।

কার্গো পরিবহন খাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান ৩৩ হাজার ৫৪২ টন মালামাল পরিবহন করেছে, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ৪০ হাজার ৯৩১ টন। পূর্ববর্তী অর্থবছরের চেয়ে গত অর্থবছর ১৮ শতাংশ কম কার্গো পরিবহন করেছে বিমান। এতে কার্গো পরিবহনে আয়ও কমেছে বিমানের। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কার্গো খাতে বিমানের আয় হয়েছে ২৪৪ কোটি টাকা, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল ৩১৫ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। সফরকারী প্রতিনিধিরা সরেজমিন পরিদর্শনের পর তাদের দেয়া প্রতিবেদন সন্তোষজনক হলে বিমানের এসিসি-৩ সনদ নবায়ন হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের মার্চ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরি কার্গো পরিবহন স্থগিত করে যুক্তরাজ্য। সে সময় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের অপ্রতুল নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশের সুযোগকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়। এর আগে একই কারণ দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ করেছিল।

ইডিএসসহ আরও বেশকিছু যন্ত্রাংশ না থাকায় নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে একই বছর ইইউভুক্ত দেশগুলো আকাশপথে কার্গো পণ্য পরিবহন কমিয়ে দেয়। পরবর্তীতে শাহজালালের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয় ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান রেড লাইনকে। বেবিচকের নিরাপত্তাকর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের পরামর্শ দেয় প্রতিষ্ঠানটি।