কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য দুই কাঠা জমি!

১১ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করার পর নির্যাতিতাদের পরিবারের মুখ বন্ধ রাখার জন্য ভয়ভীতির পাশাপাশি দুই কাঠা জমি দেওয়ার বিধান দিল গ্রামের প্রভাবশালীরা। মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে।

ঘটনার সূত্রপাত ১৬ অক্টোবর (‌সোমবার)‌ ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়ন এলাকায় নিজের বাড়িতে একা ছিলেন ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। সেই সুযোগে সজিব মন্ডল নামে এক যুবক ওই কিশেরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার নির্যাতিতা তাঁর পরিবারকে সব ঘটনা জানায়। ঘটনার দিন রাতেই দুই পরিবারে মধ্যে সব জানাজানি হয়ে যায়।

অভিযুক্ত সজিব মন্ডল প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস দেখাইনি। অভিযুক্ত সজিব স্থানীয় শাসকদলের নেতা আব্দুল কাদির মন্ডলের ছেলে এবং গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য লাল মিয়া মন্ডলের নাতি।

অভিযুক্ত প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় নির্যাতিতার পরিবারকে সালিশি সভার জন্য ডেকে পাঠান। অভিযুক্তের দাদু লাল মিয়া মন্ডল ঘটনাটি যাতে পুলিশের কানে না যায় ঘটনার দিন রাতেই কিশোরীর পরিবারদের ডেকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখায়। গ্রামের অন্যান্য মোড়লদের সঙ্গে নিয়ে লাল মিয়া মন্ডল সালিশি সভায় নির্যাতিত কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ করেন দুই কাঠা জমি।

কিশোরীর নামে দুই কাঠা জমি দিয়ে লিখিয়ে নেয় ধর্ষণের মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

মধ্যযুগীয় বর্বরতা কোনোভাবে চাপা যায় না। সারা গ্রামে জানাজানি হয়ে যায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারফত রামগোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে থানার ওসি পর্যন্ত খবর পৌঁছায়। কিন্তু এরপরও অভিযুক্ত সজিব মন্ডল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রসাশন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, গৌরীপুর থানার ওসি জানিয়েছেন, এই বিষয় কোনো অভিযোগ এলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্ন এক কিশোরীকে ধর্ষণ পর জোর করে মুখ বন্ধ রাখার জন্য গ্রামের মোড়লরা এই ধরনের বিধান দেয়। নির্যাতিতার পরিবার জানায়, ‘‌আমরা গরিব এর থেকে বেশি আর কিভাবে বিচার পাব। মেয়ের নামে জমি লিখে দিয়েছে। এখন কিছু করলে আমাদের সমস্যা আরো বাড়বে। ’‌ সূত্র: আজকাল