কী আছে ইরানকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের ১২ শর্তে?

ইরানের ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার এবং নতুন পরমাণু চুক্তির জন্য ইরানকে ১২টি শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই শর্ত না মানলে ইরানের ওপর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠোর অবরোধের হুমকি দিয়েছেন দেশটির নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকদের উদ্দেশে এক বক্তব্যে মাইক পম্পেও এ হুমকি দেন।

যা আছে যুক্তরাষ্ট্রে ১২ শর্তে:

১. ইরানকে অবশ্যই ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম সমৃদ্ধ করা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া পরমাণু অস্ত্র বানানোর জন্য ব্যবহৃত ভারী পানি মজুদ করাও বন্ধ করতে হবে।

২. ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি কমিশন (আইএইএ)কে ইরানে প্রবেশ এবং ইরানের সব পরমাণু কেন্দ্রে অবাদ প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।

৩. আইএইএ এর পক্ষ থেকে ইরানের পরমাণু কেন্দ্র পরীক্ষার পর এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্র কোনোভাবেই সামরিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে না।

৪. ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। এছাড়া পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইল পরীক্ষা বা মিসাইলের উন্নয়ন বন্ধ করতে হবে।

৫. ইরানে বন্দি যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিককে মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের পরিবাররের কোনো সদস্য বা আত্মীয় বন্দি থাকলে তাদেরও মুক্তির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো কার্যক্রমে জড়িত এমন যে কাউকে মুক্তি দিতে হবে।

৬. ইসলামিক সংগঠন হিজবুল্লাহ ও হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে তাদের সব ধরনের সমর্থন দেয়া বন্ধ করার শর্ত দেয়া হয়েছে।

৭. ইরাক সরকারকে সার্বভৌম মনে করতে হবে। এছাড়া সেখানকার শিয়া যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে।

৮. ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা বন্ধ করা এবং সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমঝোতা করতে হবে।

৯. সিরিয়ায় বাশার আল আসাদ সরকারের পক্ষে নিয়োজিত ইরানি বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে।

১০. আফাগানিস্তানে তালিবানদের সমর্থন বন্ধ করতে হবে এবং আল কায়েদার সিনিয়র নেতাদের সহায়তা দেয়া বন্ধ করতে হবে।

১১. ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী ও যোদ্ধাদের দেয়া সমর্থন বন্ধ করতে হবে।

১২. পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের প্রতি ইরানের বৈরিভাব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে সৌদি আর, আরব আমিরাত এবং ইসরাইলের প্রতি বিদ্বেষ বন্ধ করতে হবে এবং ইসরাইলকে ধ্বংস করার হুমকি থেকে সরে আসতে হবে।। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাইবার হামলা বন্ধ করতে হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে এর মধ্যে কয়েকটি শর্তে উল্লেখিত তথ্য ইরান বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এ শর্ত ঘোষণার পরপরই ইরানের প্রেসিডেন্ট সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।