কোটা আন্দোলনের দুই নেতাকে হত্যার হুমকিতে বিক্ষোভ

কোটা সংস্কার আন্দোলনের দুই নেতা নুরুল হক নূর এবং রাশেদ খানকে পিস্তল দেখিয়ে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা হুমকিদাতা ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেপ্তার দাবি করে।

বুধবার দুপুর ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূর বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলে তার রুমে (১১৯) পিস্তল নিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পি। তার সাথে ছিলেন মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমন। এ সময় তাদের হত্যার হুমকি দেয় তারা।

নূর আরও বলেন, সরাসরি তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাপ্পি বলেন: ‘‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না। প্রজ্ঞাপনটা জারি হলে তোদের কুত্তার মতো পিটানো হবে। কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে। তোরা তো কেউ বাঁচবি না। বেশি বাড়াবাড়ি করিস না। শেষবারের মতো মা-বাবার দোয়া নিয়ে নিস। শুধু প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। তোদের কী অবস্থা করি।’’

এই সময় মেহেদী হাসান সানী ও ফাহিম লিমন তাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। কিন্তু উপস্থিত অন্যরা তাদের নিবৃত্ত করেন বলে জানান তিনি।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে নূর বলেন, বাংলার ছাত্র সমাজকে দুর্বল ভাববেন না। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করুন। যেকোন ষড়যন্ত্র হলে ছাত্রসমাজ তা প্রতিহত করবে।

আরেক যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের তারা বাবা-মায়ের কাছে থেকে দোয়া নিতে বলে। দুই দিনের মধ্যে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। আমরা প্রাণনাশের শঙ্কায় আছি। আমরা পুলিশি প্রটেকশন চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পী বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ও আমার পাশের রুমে থাকে। আমার এক ছোট ভাইয়ের আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট দিত। পরে তার সাথে এই বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। আমি তাকে বলেছি, আন্দোলন করছিস ঠিক আছে। অন্য কোনো ঝামেলায় জড়াবি না।’

পিস্তল দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের সাজানো নাটক।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘আমি সেখানে গিয়েছিলাম যাতে আমার হলে কোনো ঝামেলা না হয়। বাপ্পী ভাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়েছে এটা সত্য। তবে পিস্তল দেখানোর বিষয়টা ভিত্তিহীন।’

বুধবারের বিক্ষোভ মিছিল শেষে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি-জিডি করতে গেলে তাদের জিডি নেয়া হয়নি বলে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান নুরুল হক নূর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসানকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।