কোটা সংস্কারে সোচ্চার থাকায় জাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি!

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে যুক্ত থাকা এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার ভর্তি হওয়া ৪ ছাত্রদের বিরুদ্ধে।

রবিবার বিকালে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের হুমকিদাতাদের শাস্তি ও অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে অভিযোগ পত্র জামা দিয়েছে।

অভিযোগপত্রে হুমকির শিকার ছাত্রী উল্লেখ করেন, আমি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার আছি। তাই কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া একটি চক্র সংঘবদ্ধভাবে আমার চরিত্র হরণের জন্য ধর্ষণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু ধর্ষণের হুমকিই নয় তারা আমার পরিবার নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করে যাচ্ছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগকারী ছাত্রীকে নিয়ে করা বেশ কিছু আপত্তিকর মন্তব্যের স্কিনশট এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

অভিযোগ পত্রে এই চক্রের নেতৃত্বদানকারী হামজা রহমান অন্তরের (নাটক ও নাট্যতত্ত¡-৪১) নাম উল্লেখ করেন। সে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে- ইশকাত হারুন আকিব (বাংলা-৪৬), জাহিদ হাসান ইমন (আইআইটি-৪৬, ), মাসুদ রানা (মাইক্রোবায়োলজি-৩৯) এবং রনি ভৌমিক (ফেসবুক অনুসারে, তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি)। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জাড়িত ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিরোধী।

ওই ছাত্রী আরো উল্লেখ করেন, এই চক্রটি আমকে প্রস্টিটিউট বানানোর জন্য পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা আমাকে বারবার উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে এবং বাজে মন্তব্য রটাচ্ছে।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজের সম্ভ্রম ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে উল্লেখ করে অভিযুক্তদের বহিষ্কার ও ক্যাম্পস থেকে বিতাড়নের দাবি জানিয়েছেন।

এর আগে এক ছাত্রীকে হয়রানীর অভিযোগে হামজা রহমান অন্তরকে ৬ মাসের বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া হল ক্যান্টিনে চাঁদা দাবিসহ ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে একালায় নানান অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার জুলকারনাইন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইতিমধ্যেই তদন্তের কাজ শুরু করেছি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। ’

এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্য মঞ্চের মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বলেন,“ কোটা নিয়ে একজন ছাত্রী মত প্রকাশ করছে,এটা ত ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্ন। ছাত্রলীগের এখানে বাধা দেওয়া,ধর্ষণের হুমকি দেওয়া এটা একটা গুরুতর অপরাধ। এটা স্বাধীন দেশে মত প্রকাশের উপর ফৌজদারি অপরাধ। ফৌজদারি অপরাধে আমি এর শাস্তি চাইছি।”

অভিযুক্ত হামজা রহমান অন্তর বলেন, “এ সব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার। আমি কাউকে ধর্ষণের হুমকি দিইনি। এই ধরনের প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না।”