বিশ্ব নির্বাচনকে সফল আখ্যায়িত করেছে : সিইসি

সারা বিশ্ব একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সফল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বলে দাবি করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচনোত্তর মতবিনিময় সভায় তিনি এ দাবি করেন। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্য কমিশনাররা বক্তব্য রাখেন।

সিইসি প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতে ইসি সচিবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সুযোগ্য ও দক্ষ সচিবের নেতৃত্বেই নির্বাচন কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হয়েছে।’

একাদশ সংসদ নির্বাচন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে কে এম হুদা বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি— এই নির্বাচনটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা দেখেছেন নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে, বিভিন্ন কমিউনিটি থেকে কমেন্ট করেছে। তারা অভিমত ব্যক্ত করেছে। তারা এই নির্বাচনকে সফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেউ প্রত্যাখ্যান করেননি। সেই রাশিয়া থেকে শুরু করে বলগা নদীর পাড় দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের আমেরিকা- ইউরোপ সর্বত্র এই নির্বাচনের বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। সেখান থেকে আমরা শীতের হাওয়ায় ইথারে-ইথারে খবর পেয়েছি।’

সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠান কর্মকর্তাদের সাফল্য ও সার্থকতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনও দেশ বা সংস্থা এই নির্বাচন নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া করেছে? নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলেছে? এটা আমাদের বিজয়।’

ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও সফল একটি নির্বাচন সম্পন্ন করে দিয়ে আমরা সবাই নববর্ষে অনুপ্রবেশ করেছি। এই বছরটা আমাদের জন্য চালেঞ্জিং হবে। সুন্দর হবে। সামনে যত কাজ আসবে, তার প্রতিটি চ্যালেঞ্জের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে— সেই প্রত্যাশা।’

উপজেলা নির্বাচনের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সামনে যে নির্বাচন আসবে, সেগুলো গুরুত্ব ও পরিধির দিক থেকে কোনও অংশেই কম নয়। সেগুলোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি থাকবে। তবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য বিরাট বড় একটি অনুষ্ঠান।’

তিনি বলেন, ‘নানা গুরুত্বের আঙ্গিকে বাংলাদেশের নির্বাচন ভিন্ন। গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশাল। পৃথিবীর সব দেশে নির্বাচন একদিনে হয় না। এদেশে ১০ কোটি ৪১ লোকের ভোট একদিনে নিতে হবে। একদিনে পুরো নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। কাছাকাছি কোথাও এই পরিস্থিতি নেই। এই কারণেই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন। আর সেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আমরা নির্বাচনের সাফল্য হাতে নিয়ে এসেছি। এখন আমাদের পরিশ্রমের ফল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে, যারা দেশ পরিচালনা করবেন। আমরা পরিশ্রমের ফসল তাদের হাতে তুলে দিলাম। তাদের দায়িত্ব হবে— দেশকে সেইভাবে পরিচালনা করা। দেশকে কতটা এগিয়ে নিতে পারে সেটা।’

সিইসি বলেন, ‘ইভিএমে কাজ করতে গেলে ভুলভ্রান্তি হবে। কাজ করতে গিয়ে সবকিছু সঠিকভাবে আনা সম্ভব হবে না। তবুও এই ইভিএম আমরা সার্থকভাবে ব্যবহার করতে পারলে,তা দেশের জন্য মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’

নির্বাচন অনুষ্ঠানে আপনাদের যে আগ্রহ, উচ্ছাস, উদ্দীপনা, তৎপরতা ও ক্ষীপ্রতা— কমিশনের প্রত্যেকেই প্রত্যেকের কর্তব্য পালন করেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে যতগুলো চ্যালেঞ্জ ছিল, তার সবগুলোই আমরা মোকাবিলা করেছি। একটি চ্যালেঞ্জও আনটাচ রাখিনি।’

তিনি নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘সেনাবাহিনী নির্বাচনে সহযোগিতার জন্য একটি দক্ষ টিম পাঠিয়েছিল। পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী সহযোগিতা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।’