সৌদি গ্র্যান্ড মুফতিকে কাতারের মুফতির চিঠি

‘কোরআনের কোথায় মুসলিমদের অবরোধের কথা আছে?’

অবরোধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতির সমালোচনা করে একটি ‘জ্বালাময়ী’ চিঠি লিখেছেন কাতারের এক মুফতি। চিঠিতে পবিত্র কোরআনের কোথায় অবরোধের কথা লেখা আছে, তা সৌদির মুফতির কাছে জানতে চেয়েছেন তিনি।

সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ছোট দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিকসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশ। কাতারের সঙ্গে সৌদির সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দেশটিতে সৌদি আরব থেকে যাওয়া খাদ্য সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধে যোগ দেওয়া উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) অপর দুই দেশ বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও আরব দেশ মিসরও কাতারের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয়। এর ফলে জিসিসির সদস্য দেশ কাতার একরকম একঘরে হয়ে পড়েছে।

সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল-আজিজ ইবনে আবদুল্লাহ আল আশ-শেখ কাতারকে দেওয়া অবরোধের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। উল্টো তিনি সৌদির এই কাজটিকে ন্যায্যতা দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সৌদির মুফতিকে লিখেছেন কাতারের মুফতি শায়খ আনোয়ার আল-বাদাবি।

চিঠিতে বাদাবি বলেন, ‘কাতারের ওপর অবরোধ ও বয়কট সৌদি আরবের জনগণের জন্য কল্যাণকর বলে আপনি একটি ফতোয়া জারি করেছেন। ফতোয়ার শেষের দিকে আপনি আল্লাহর কিতাব (পবিত্র কোরআন) ও মহানবীর (সা.) সুন্নাহর প্রতি অনুরক্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।’

‘আল্লাহর কিতাব ও রাসুলুল্লাহর (সা.) সুন্নাহর কোথায় আমরা পেয়েছি যে, এক মুসলিম তার নিজের সুবিধার্থে আরেক মুসলিম ভাইকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে অবরোধ করবে?’

‘আপনি আল্লাহর কিতাব ও রাসুলুল্লাহর সুন্নাহ অনুসরণ করার কথা বলেছেন। আপনি যা বলেছেন, তার সপক্ষে কোনো আয়াত (কোরআনের সুরার কোনো একটি বাক্য) কি দেখাতে পারবেন? এই যে হাদিসের বই আছে…তা থেকে একটি দুর্বল হাদিসও কি দেখাতে পারবেন, যা আপনার ফতোয়ার পক্ষে?’

‘আপনি কোরআনের কোনো আয়াত কিংবা হাদিসের ভিত্তিতে ফতোয়া দেননি। তাহলে এই ফতোয়া কিসের ভিত্তিতে দিয়েছেন? তার মানে কি এ রকম একটা মারাত্মক বিষয় নিয়ে ফেতনা তৈরি করতে চেয়েছেন আপনি?’

‘আপনার কাছে কি ওহি এসেছে, নাকি এটা আপনি স্বপ্নে পেয়েছেন? তারপর ফতোয়া দিয়েছেন, নাকি কোনো আলোচনা বা সংলাপ ছাড়াই এটা (ফতোয়া) কোনো ধর্মীয় নেতার (গ্র্যান্ড মুফতি) ওপর বাধ্যবাধকতা? হে গ্র্যান্ড মুফতি, কাতারকে বয়কট করা কি পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস করা নয়? আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কি পারিবারিক বন্ধন নষ্টের বিরুদ্ধে বলেননি?’