কোস্টারিকার বিপক্ষে স্বস্তির জয় ব্রাজিলের

রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি ব্রাজিল। আগে গোল করেও সেটি ধরে রাখতে পারেনি সেলেকাওরা। শুক্রবার (২২ জুন) দ্বিতীয় ম্যাচে আর হতাশায় মুখ ঢাকতে হয়নি নেইমারদের। কোস্টারিকার বিপক্ষে ২-০ গোলের স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

এদিন ম্যাচের ১৩ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুন সুযোগ পেয়েছিল কোস্টারিকা। ডানপাশ থেকে ক্রিশ্চিয়ান গ্যাম্বোয়া দারুণভাবে বলটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে দৌঁড়ে যাওয়া ইয়োহান ভেনেগাসের কাছে, তার শট গোলপোস্টের বাম পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।

ম্যাচের ২৫ মিনিটে অসাধারণ শটে কোস্টারিকার জালে বল জড়িয়ে দেন জেসুস। অবশ্য তার আগেই সংকেত দেয়া হয় অফসাইডের। যে কারণে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ২৮ মিনিটে দুর্দান্ত গতিতে বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে শট নেন নেইমার। কোস্টারিকা গোলরক্ষক কেইলর নাভাস কোনোমতে সেটা ফিরিয়ে দেন।

৩২ মিনিটে জেসুসের উদ্দেশে বল উড়িয়ে দেন নেইমার। কিন্তু জেসুস বলে মাথা ছোয়াতে ব্যার্থ হন। পরে কোস্টারিকার ডিফেন্ডার ব্রায়ান অভিয়েদো বল ক্লিয়ার করেন। অফসাইডও ডাকেন রেফারি। ফলে কোস্টারিকার বিপক্ষে ০-০ স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালাতে থাকে ব্রাজিল। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ চালিয়েও গোলের দেখা পাচ্ছেন না নেইমার-জেসুসরা। খেলার ৫৬মিনিটে চলতি বলে জোরালো শট নেন নেইমার। কিন্তু তার নেয়া শটটি বারের উপর দিয়ে চলে যায়। গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করেন ব্রাজিল তারকা।

৭১ মিনেটে ডি বক্সের অনেক দূর থেকে গোলের জন্য জোরালো শট নেন নেইমার। কিন্তু তার নেয়া শটটি কোস্টারিকার গোলবারের ঠিক পাশদিয়ে চলে যায়। গোল না পেয়ে জার্সি দিয়ে নিজের মুখটা ঢেকে রাখেন নেইমার। ৭৭ মিনিটে বলতে গেলে একাই মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে কোস্টারিকার বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। কিন্তু ফাঁকা পেয়েও শটটা নিতে পারেননি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের আলতো ছোঁয়ায় বক্সের মধ্যেই পড়ে যান নেইমার। ভিএআরে দেখা যায় এটা ফাউল হয়নি।

নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সেলেকাওদের বিপক্ষে একাই লড়ে যাচ্ছিলেন কোস্টারিকার গোলকিপার। ব্রাজিলের ১১ জনের বিপক্ষে বলতে গেলে তিনি একাই লড়লেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। যোগ করা সময়ে (৯০+১) ব্রাজিল সমর্থকদের মুখে হাঁসি ফোটান কৌতিনহো। ফার্নান্দোর ক্রস পেয়ে বক্সের মধ্যে ফিরমিনোর মাথা হয়ে হেসুসের পায়ে বল যায়। সেখান থেকে তিনি সেটা দেন দৌঁড়ে আসা কৌতিনহোকে। বার্সেলোনা মিডফিল্ডার দারুন দক্ষতায় লক্ষভেদ করেন (১-০)।

যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে আরও একটি গোল আদায় করে নেয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বক্সের ভিরতে কস্তার পাস পেয়ে গোল করেন নেইমার (২-০) । ফলে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ফিলিপ কৌতিনহো আর নেইমারের অসাধারণ গোলেই কোস্টারিকাকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম গোলের স্বাদ পেলেন নেইমার। আর কৌতিনহো পেলেন দ্বিতীয় গোল।

বিশ্বকাপে এটি ছিল দুই দলের তৃতীয় লড়াই । ১৯৯০ সালে প্রথম দেখায় ব্রাজিল জিতেছিল ১-০ গোলে। এরপর ২০০২ সালে ৫-২ গোলে জয় পায় ব্রাজিল।

আগামী ২৭ জুন মস্কোকে সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। একইদিন নিজনি নভগোরোদে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে কোস্ট রিকা।