‘ক্রিকেটাররা স্ত্রীকে ডিভোর্স দিলে আমরা কী করতে পারি?’

এশিয়া কাপের ১৫ সদস্যের দলে রাখা হয়নি সাব্বির রহমানকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের বাজে পারফরম্যান্স তো ছিলই, সঙ্গে যোগ হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে বারবার শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ। এটিও সাব্বিরের বাদ পড়ার পেছনে ভুমিকা রেখেছে।

শুধু বাদই নয়, শনিবার বিসিবি ডেকেছে সাব্বিরকে। তাঁকে নিয়ে যে বিতর্ক এর ব্যাখ্যা চাইবে বিসিবি। সাব্বিরের সঙ্গে বিসিবির শুনানিতে আসতে হচ্ছে নাসির হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনকেও।

মাসখানেক আগে নাসির আলোচিত হয়েছেন এক কথিত মডেল বান্ধবীর সৌজন্যে। সেই বান্ধবী ফেসবুকে নাসিরকে নিয়ে ‘বোমা’ ফাটান। এ নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়ে বিসিবি। মোসাদ্দেকের ঘটনা তো একেবারে টাটকা। ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করেন খালাতো বোনকে। তাঁকে আবার ১৬ আগস্ট ডিভোর্সও দিয়েছেন। মোসাদ্দেকের স্ত্রী সামিনা শারমীন ২৬ আগস্ট রোববার ময়মনসিংহের আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন।

ক্রিকেটারদের শুনানিতে ডাকা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেছেন,‘সাব্বিরকে শৃঙ্খলা কমিটি থেকে ডাকা হয়েছে। এর পরে সিদ্ধান্ত হবে। আর এখন সে স্কোয়াডে নেই। অবশ্যই এসবের একটা প্রভাব আছে।’

তাদের বিরুদ্ধে কী ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন প্রশ্নে নাজমুল বললেন, ‘কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া নেবে। কথা না বলে, একজনকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। এ কারণেই ডেকেছে। কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে। যেটা নেওয়া হওয়া উচিত তেমন সিদ্ধান্তই আসবে।’

গত তিন বছর ধরে তিন ক্রিকেটারকে ফৌজদারি মামলায় জেলে যেতে হয়েছে। চার জনের বিরুদ্ধে উঠেছে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ। বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তরুণ খেলোয়াড়েরা। বিসিবি সভাপতি অবশ্য নাসির-সাব্বিরকে তরুণই বলতে চান না, ‘এরা বুড়া হয়ে গেছে! এখনো যদি ওদের জুনিয়র বলেন, তিন-চার বছর ধরে খেলছে একেকজন।’

ক্রিকেটারদের এমন পরিস্থিতি বিব্রত বিসিবি এবার কঠোরই হতে যাচ্ছে। নাজমুল বলেন, ‘ব্যক্তিগত অনেক সমস্যা আছে। সেটা থাকতে পারে। সবকিছুতে বিসিবিকে জড়ালে হবে না। সব সমাধান বিসিবির পক্ষে করাও সম্ভব না। ডিভোর্স হয় না বাংলাদেশে? কেউ যদি কাউকে ডিভোর্স দিতে চায় এটা নিয়ে আমরা কী করতে পারি? কেউ যদি একাধিক বিয়ে করে সেটিতেও আমাদের কিছু করার নেই। এখন তো আমরা বলতে পারি না যে ক্রিকেট যারা খেলে তারা একাধিক বিয়ে করতে পারবে না! তবে ক্রিকেট খেলোয়াড়েরা অবশ্যই আইডল। তাদেরকে অনেকে অনুসরণ করে। অবশ্যই তাদের ভালো মানুষ হতে হবে। কারও কারও শাস্তি দিচ্ছি। যদি দেখি এসবেও কাজ হচ্ছে না, তখন কড়া শাস্তি দিতেই হবে।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমার কাছে একটাই, সে জাতীয় দলে খেলতে পারবে না। এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যদি কেউ খেলতে না পারে, এর চেয়ে বেশি আর কী করতে পারব বলুন?’
শাস্তি থাকছেই। এর পাশাপাশি বিসিবি বিতর্কিত কর্মকাণ্ড রোধে মনোবিদেরও শরণাপন্ন হতে চায়।

তিনি বলেন, ‘আমরা মনোবিদ নিয়ে আসার কথা ভাবছি। খেলোয়াড়দের এ নিয়ে কিছু পরামর্শ, উপদেশ দেওয়া যায় কিনা। আমরা তো খালি খেলায় জিততে প্রশিক্ষণ দিই। এখন এসব ব্যাপারেও কিছু করা যায় কিনা ভাবছি। খেলোয়াড়েরা কী করতে পারবে, কী পারবে না এসব। যখন তারা সফরে যাবে তখন তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার কথা ভাবছি। এটা নিয়ে দিক নির্দেশনা তৈরি করছি। সবকিছুর পর কিন্তু ওদের নিজেদেরই ভালো হতে হবে। জোর করে কাউকে ভালো করা যায় না। ওরা নিজেরা ভালো না হলে আমাদের কিছু করার নেই, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’