ক্ষতিপূরণ না দিলে নিলামে উঠবে গ্রীনলাইনের সব বাস

রাজধানীতে গ্রীনলাইনের একটি বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে আদেশ অনুযায়ী ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ না দেওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে উচ্চ-আদালত। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে পরিবহনটির ম্যানেজারকে দুই ঘণ্টার মধ্যে হাজিরের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, প্রয়োজনে গ্রীনলাইনের সব গাড়ি জব্দ করে নিলামে তুলে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।

বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি নিয়ে পরিবহনটির ম্যানেজারকে দুপুর দুইটার মধ্যে আদালতে হাজির হতে বলেছেন।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ির ছেলে রাসেলের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। তিনি ঢাকার আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় থাকেন। গেল বছরের ২৮ এপ্রিল হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রীনলাইন পরিবহনের বাসচালক কবির মিয়া রাসেলের ওপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে দেন। এতে তার দেহ থেকে বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর সরকারি দলের সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

গত ১২ মার্চ প্রাইভেট কারচালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত সেদিন হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। একইসঙ্গে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি ৩১ মার্চ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। পরে গত ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদনটির শুনানি হয়।

রাসেলকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি তার অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটা পড়া পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রীন লাইনকে বহন করতে বলা হয়। এ জন্য দুই সপ্তাহ সময়ও বেঁধে দেন আদালত। আপিলটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের ওই অর্থ রাসেল সরকারকে দিতেই হবে গ্রীনলাইন পরিবহনকে।

৬ মার্চ রিটের শুনানিতে রাসেল আদালতকে বলেছিলেন, পা হারানোর পর এখন পর্যন্ত গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ তাকে একটি টাকাও দেয়নি। খোঁজখবর নেয়নি, চিকিৎসার ব্যয়ও বহন করেনি।