ক্ষুব্ধ ম্যারাডোনার প্রশ্ন, আমি কি অযোগ্য?

ডিয়েগো ম্যারাডোনা জানতে চান, এই যে আর্জেন্টিনার এত এত সম্ভাব্য কোচের নাম উচ্চারিত হচ্ছে, সেখানে কেন তাঁর নাম নেই? সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন। খুব কম ফুটবলারই তাঁর মতো জাদু দেখাতে পেরেছে মাঠে। তারকায় ঠাসা নয় এমন একটা দল নিয়েও ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে। এমন একজন ফুটবল কিংবদন্তি আর্জেন্টিনা মিডিয়া কেন গোনেই না!

এ নিয়ে ম্যারাডোনা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। দীর্ঘ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘জাতীয় দলের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে বলছি, কিছু সাংবাদিক যে আমাকে আর্জেন্টিনার সম্ভাব্য কোচের মধ্যে রাখে না, এতে আমি খুব বিরক্ত হই। শাভো ফাকসের (আর্জেন্টিনার স্বনামধন্য ক্রীড়া সাংবাদিক) কথাই ধরুন। উনি তো কখনোই আমার নাম সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রাখলেন না। আমি ওনার সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারের শুরু থেকে জানি। তখনো আমি খেলেছিলাম। আর এখন তো মনে হয়, উনি আমাকে চেনেনই না!’

আর্জেন্টিনা সংবাদমাধ্যম ৫৭ বছর বয়সী ম্যারাডোনাকে আসলেই আর কোচ হিসেবে চায় না। ২০১০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে দলকে নিয়ে গেছেন টেনেটুনে। আর কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে আর্জেন্টিনা হজম করেছে ৪ গোল! অথচ সেটাই ছিল লিওনেল মেসির সেরা সুযোগ। মেসি তখন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা সময় কাটাচ্ছিলেন। আর্জেন্টিনা অবশ্য বিশ্বকাপে ভালোই খেলছিল। গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ ৭ গোল করেছিল। দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকোকে দিয়েছিল ৩ গোল। কিন্তু শক্ত প্রতিপক্ষ পড়তেই জার্মানির সামনে স্রেফ উড়ে গেল ম্যারাডোনার দল।

সেবার ম্যারাডোনা নিজে থেকেই জাতীয় দলের পদ থেকে সরে যান। ম্যারাডোনার স্কোয়াড নির্বাচন, হুয়ান রোমান রিকেলমেকে বিশ্বকাপ দলে নিতে না-পারা, বিশ্বকাপের মধ্যেই ম্যানেজার কার্লোস বিলার্দোর সঙ্গে বিবাদ…এসব উঠে এসেছিল আলোচনায়। তবে ম্যারাডোনার প্রশ্ন, একবার ব্যর্থ হওয়ার পরও তো আরও অনেক কোচকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। সরাসরি নাম না বললেও হোসে পেকারম্যানের দিকে সম্ভবত ইঙ্গিত করেছেন তিনি। পেকারম্যান ২০০৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিকতম সবচেয়ে ভালো ও ভারসাম্যপূর্ণ দল নিয়ে সেই জার্মানির কাছেই কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছিলেন।

পেকারম্যানকে নিয়ে ভাবতে পারলে ম্যারাডোনা কেন নয়? এটাই তাঁর প্রশ্ন, ‘আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম আরও অনেক সাবেক কোচের কথা তো বলে। কিন্তু কখনো আমার নাম নিল না। এটা আমাকে পোড়ায়। অবশ্য আর্জেন্টিনার ক্রীড়া সাংবাদিকতা সব সময়ই এমন ছিল।’

ফুটবলার ম্যারাডোনা শীর্ষবিন্দুতে অবস্থান করলেও কোচ হিসেবে তাঁর রেকর্ড ভয়াবহ। আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ছাড়াও চারটি ক্লাবের কোচ ছিলেন। কোথাও ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি। আরব আমিরাতের ক্লাব আল ওয়াসল থেকে এক বছরের মাথায় ছাঁটাই হয়েছিলেন ২০১২ সালে। গত বছর আবার আমিরাতের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব আল ফুজাইরার দায়িত্ব নেন। কথা ছিল, ম্যারাডোনা দলকে প্রথম বিভাগে তুলে আনবেন। কিন্তু পারেননি। ফলে আবারও ছাঁটাই।

ম্যারাডোনা আপাতত বেলারুশের ক্লাব ডায়নামো ব্রেস্তের চেয়ারম্যান হিসেবে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ। তবে তিনি আবার আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের দায়িত্ব চান। এমনকি বিনা বেতনে হলেও ভালোবাসা থেকে কাজটা করতে রাজি আছেন বলে কদিন আগে মন্তব্য করেছেন।