ক্ষয় হয়ে গেছে বেরোবির স্পীড ব্রেকার : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার

এইচ.এম নুর আলম, বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের(বেরোবি)সামনে স্থাপন করা স্পীড ব্রেকারগুলোর অধিকাংশই ক্ষয় হয়ে গেছে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করছেন শিক্ষার্থীসহ আপামর জনগণ।কিন্তু নজর কাড়ছেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রংপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের। ফলে দিন দিন জীবনের ঝুঁকি বেড়েই চলছে শিক্ষার্থী ও আপামর জনগণের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক গেইট ১ ও ২ ( প্রধান গেইট) এর সামনে ও বিপরীত পাশে চারটি স্পীড ব্রেকার রয়েছে এবং পার্ক মোড় জিরো পয়েন্টে আরেকটি স্পীড ব্রেকার স্থাপন করা হয় ২০১৫ সালে।২০১৫ সালে কয়েকটি দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে ওভার ব্রীজ ও স্পীড ব্রেকার দাবিতে মানববন্ধন করলে সড়ক ও জনপদ (রোডস এন্ড হাইওয়ে) বিভাগ পাঁচটি স্পীড ব্রেকার স্থাপন করে। কিন্তু এগুলোর দুটির (একাডেমিক গেইট ১ এবং পার্ক মোড় জিরো পয়েন্টের সামনে স্থাপিত) অধিক অংশ ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েই চলছে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারে।

এ দিকে ওভার ব্রীজ, ট্রাফিক পুলিশ ও স্পীড ব্রেকার না থাকায় রাস্তা পারাপারে জীবনের ঝুঁকির কথা বলতে গিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হক বলেন, স্পীড ব্রেকার না থাকায় রাস্তা পারাপারে সমস্যা হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে।

উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ৬ষ্ঠ ব্যাচের সাইফুল ইসলাম বলেন, স্পীড ব্রেকার না থাকায় গাড়িগুলো বেপরোয়া যাতায়াত করছে। ফলে দিন দিন রাস্তা পারাপারে আমাদের জীবনের ঝুঁকির আশংকা বেড়েই চলছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১ম ব্যাচের মেরিনা আক্তার বলেন, ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় গাড়িগুলোর গতি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছেনা। ওভার ব্রীজ না থাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে। অতিদ্রুত আমরা ওভার ব্রীজ ও স্পীড ব্রেকার মেরামত চাই।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা বলেন, আমরা গত উপাচার্যের ( ড. একে এম নূর-উন-নবী) সময়ও ওভার ব্রীজ ও স্পীড ব্রেকার নির্মাণের বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম।এবারও দিবো। আমরা অতিসত্ত্বর স্পীড ব্রেকার ও ওভার ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ট্রাফিক পুলিশ দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহিব্বুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করলে প্রয়োজনের তাগিদে ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা হতে পারে।

স্পীড ব্রেকার মেরামতের ব্যাপারে উদ্যোগের কথা জিজ্ঞেস করলে প্রক্টর ড. আবু কালাম মো. ফরিদে উল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আবারো অফিসিয়ালি সড়ক ও জনপদ বিভাগকে জানানো হবে।

শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১১ ও ১২ নভেম্বর আখেরুজ্জামান ৬ষ্ঠ ব্যাচ ও মেহেদী হাসান রনি নামে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী গরুতর আহত হয়। পরে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে দ্রুত ওভার ব্রীজ ও স্পীড ব্রেকারের দাবি তোলে।

২৫ নভেম্বর শিউলি রানী টুম্পা নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাস্তা পার হতে গেলে মাথা ফেটে যায় । এতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করে । পরে তাৎক্ষণিক স্পীড ব্রেকারের কাজ শুরু করে।

জানা যায়,২০১৫ সালেই ছোটোখাটো ১৫ টির মতো দূর্ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এই রাস্তায় ঘটে। আর এখন এ দুর্ঘটনা নিয়মিত হওয়ার আশংকা করেছেন শিক্ষার্থীরা।