খালেদাকে কারাগারে পাঠানোয় দ্বিমত ছিল চিকিৎসকদের

‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের সব চিকিৎসক একমত ছিলেন না। তারপরও জুনিয়র একজন চিকিৎসককে চাপ দিয়ে আজ দুপুর ১টার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র নেন।’ এ অভিযোগ করেছেন খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. সাইফুল ইসলাম।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। ‘সিনিয়র চিকিৎসকবৃন্দ’ ব্যানারে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, গত এক মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (ডিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমে একটিবারের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে বলে জানাননি। শুধু তাই নয়, উন্নতির ইঙ্গিত পর্যন্ত দেননি। আজকের সংবাদ সম্মেলনে, বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের উন্নতির কোনো প্রমাণ নিশ্চিত করতে পারেননি।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, কোনো কোনো চিকিৎসক খালেদা জিয়াকে এই আকস্মিক হাসপাতাল ত্যাগের বিষয়ে একমত ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত নিয়মিত চিকিৎসক নন, এমন একজন কনিষ্ঠ চিকিৎসক, জিনি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে অবগত ছিলেন না বা কখনো তাকে দেখেননি। এমন চিকিৎসককে চাপ দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র নেয়। কোনো জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বা অধ্যাপক বেগম খালেদা জিয়াকে সরাসরি বিষয়টি অবগত করেননি, তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানাননি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. আব্দুল জলিল চৌধুরী বর্তমানে দেশে নেই। এছাড়া ডা. বদরুন্নেসাও দেশে নেই। দেশে থাকা মেডিকেল বোর্ডের অন্য চিকিৎসকরা তাকে (খালেদা জিয়াকে) হাসপাতাল ত্যাগের বিষয়ে কোনো আভাস দেয়নি। গত কয়েক দিনেও এমন আভাস দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, যে হুইল চেয়ারে কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, আজ সেই হুইল চেয়ারে পুনরায় তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সংবিধান মোতাবেক একজন রোগী চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু সেই অধিকার খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ পালন করা হয়নি। একজন রোগীর প্রতি এমন অবহেলা বিএসএমএমইউ ও চিকিৎসকদের সুনামে খর্ব করবে। সুচিকিৎসা না পেয়ে খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়ভার সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. আব্দুল কুদ্দুস, প্রফেসর ডা. এ কে এম আমিনুল হক, প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।