খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না : বিএনপি

খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ও নির্বাচন কখনই ফলপ্রসূ হবে না বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল এবং মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন পালিত হয়েছে।

সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ও নির্বাচন কখনও ফলপ্রসূ হবে না। এ জন্য আমরা বলেছি- গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন।

তিনি বলেন, একদিকে সরকার সংলাপে রাজি হয়েছে, অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়েছে। এ দুটিই সাংঘর্ষিক। এটি কখনই গণতান্ত্রিক আচরণ হতে পারে না। এতে সংলাপের আন্তরিকতা বহন করে না।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নির্বাচন দিচ্ছেন। কিন্তু আপনারা হেলিকপ্টারে করে জনগণের কাছে যাচ্ছেন। আর আমাদের নেত্রী কারাগারে এবং আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের কর্মীরা কোথাও দাঁড়াতে পারছেন না।

‘বেগম জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এবং আসন্ন নির্বাচনে যাতে তিনি অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সে জন্য মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া জামিন পেলেও তাকে জামিন দেয়া হয়নি। একটির পর একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক করে রাখা হচ্ছে।

মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বেগম জিয়া ও বিরোধী দল ছাড়া আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। তাই মুক্ত বেগম জিয়াকে নিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই।

এ সময় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, কোনো সংঘাতের পথে না গিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। এ কারণে সরকার সংলাপ করতে রাজি হয়েছেন। আমরা সাত দফা দাবির ওপরে সংলাপ করব।

‘আর সংলাপ, আন্দোলন ও নির্বাচন একসঙ্গে চলবে। সফলতা না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের নামে দেশে আবারও স্বৈরাচার ও বাকশাল প্রবর্তন করেছেন। আমরা বেগম জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করব।

এর আগে গত সোমবার বেগম জিয়াকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের সাজা দেয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

কর্মসূচি কেন্দ্র করে সকাল ১০টা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উপস্থিত হন।

এ সময় নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়ার প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন।

এদিকে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচি কেন্দ্র জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। প্রেসক্লাবের বাঁ পাশে প্রিজনভ্যান, জলকামান ও এপিসি রাখা হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, বেগম সেলিমা রহমান, রুহুল আলম চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ।