খুনি নয়নের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে যা বললেন মিন্নি

বরগুনায় প্রকাশ্যে সড়কে বহু পথচারীর উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে নৃশংস হত্যার ভিডিও ফুটেজ সারাদেশের মানুষকে শিউরে তুলেছে। এদিকে শুক্রবার রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সঙ্গে ঘাতক নয়ন বন্ডের বিয়ের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়িয়ে পড়ে।

পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়াও বিয়ে হওয়ার কথা স্বীকার করেন।

তবে মিন্নি বলেন, নয়ন ও তার সঙ্গীরা অস্ত্র ও আমার ভাই-বোনের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে একটি কাগজে সই নেয়। পরে তা দিয়ে কী করেছে তা আমার জানা নাই।

নয়ন বন্ডের ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বিয়ের প্রথম স্বাক্ষী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দ্বিতীয় আসামি বাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজি।

বলা হচ্ছে, গত বছরের ১৫ অক্টোবর আছরের নামাজের পর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের দেনমোহর হয়েছিল ৫ লাখ টাকা। তবে দেনমোহরের কোনো নগদ পরিশোধ ছিল না।

আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বলেন, নয়ন আমাকে খুব উত্ত্যক্ত করতো। আমাকে হুমকি দিত এবং অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখাত। আমার ভাই কলেজ রোড এলাকার একটি স্কুলে পড়ে। নয়ন আমার স্কুলপড়ুয়া ভাই এবং বোনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার বাবাকেও বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিত। একদিন অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে একটি বাসায় নিয়ে যায় নয়ন। পরে সেখানে বসে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয় সে। তবে সেই স্বাক্ষর দিয়ে নয়ন কিছু করেছে কি-না আমি জানি না।

তিনি আরো বলেন, যারা আমার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরা মন্তব্য করেছে, আমি তাদের শাস্তি চাই।

মিন্নি বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে একমাত্র রিফাত শরীফের সঙ্গে। এছাড়া আমার আর কখনো কারও সঙ্গে বিয়ে হয়নি। যেহেতু বিয়েই হয়নি, ডিভোর্স হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। রিফাতই আমার স্বামী এবং এটাই সত্য। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল ১০টায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা দিনে দুপুরে কুপিয়ে আহত করে রিফাত শরীফকে। আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ঐদিন বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আলোচিত এ মামলাটিতে ক্রম অনুযায়ী আসামিরা হলো, মো. সাব্বির আহমেদ নয়ন (নয়ন বন্ড) (২৫), মো. রিফাত ফরাজী (২৩), মো. রিশান ফরাজী (২০), চন্দন (২১), মো. মুসা, মো. রাব্বি আকন (১৯), মো. হাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), মো. রায়হান (১৯), মো. হাসান (১৯), রিফাত (২০), মো. অলি (২২) ও টিকটক হৃদয় (২১)। বাকি ৫ থেকে ৬ জন অজ্ঞাত আসামি।