খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ খুঁজতে বিশেষ কমিটি

খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ এবং তা কমানোর উপায় নিয়ে সুপারিশ দেওয়ার জন্য এবার বিশেষ কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় এই ব্যাংকের ৮টি বিভাগ এই প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করবে। যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দুই অঙ্কের বেশি, তাদের এক অঙ্কে নামানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঙ্গলবার (১১ জুন) খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে এমন সাতটি ব্যাংককে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ব্যাংকগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান ও আহমেদ জামালসহ নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নেওয়ার পরই ঘোষণা দিয়েছিলেন ‘খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না’। তার সেই ঘোষণা সত্ত্বেও গত মার্চ প্রান্তিক শেষে দেশে খেলাপি ঋণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে এক লাখ দশ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা হয়েছে। গেল বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। তিন মাসে বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা।

জানা গেছে, এর আগে এক প্রান্তিকে এত বেশি খেলাপি ঋণ কখনই বাড়েনি। বিশাল অঙ্কের খেলাপি ঋণ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে এ বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৈঠক থেকে খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন অফসাইট সুপারভিশন, ব্যাংক পরিদর্শনে নিয়োজিত চার বিভাগ, ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস এবং ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকরা।

খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণ, কোন পদ্ধতিতে খেলাপি ঋণ কমানো যায়- এসব নিয়ে বিভিন্ন সুপারিশসহ তারা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে সুপারিশসহ দ্রুততম সময়ে গভর্নর বরাবর দাখিল করবেন।

বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ অনেক বেড়েছে। এ কারণে সাত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডাকা হয়েছিল। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কেন বেড়েছে তার কারণ এবং পরবর্তীতে কীভাবে কমানো যায় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকটি বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা।