খেলোয়াড় ক্রয়ের খরচে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বার্সা

সুনাম, খ্যাতি—যাই বলুন, দলবদলের বাজারে দুহাতে টাকা ঢালার সুবাদে এই তকমাগুলো এক সময় ছিল রিয়াল মাদ্রিদের একক সম্পত্তি! চড়া দামে তারকা খেলোয়াড় কিনতে রিয়াল সব সময়ই উদারহস্ত। সাম্প্রতিক সময়ে ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজির মতো নব্য ধনী ক্লাবগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে খেলোয়াড় কিনে টাকা খরচের ব্যাপারে তাদেরও কার্পণ্য নেই! কিন্তু রিয়াল, ম্যান সিটি, পিএসজি—যাদের নামই বলুন, নতুন খেলোয়াড় ক্রয়ের পেছনে টাকা ঢালায় বিশ্বের বাকি সব ক্লাবকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে বার্সেলোনা!

খেলোয়াড় ক্রয়ের পেছনে খরচের অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে কাতালন জায়ান্টরা। খালি করে ফেলেছে ব্যাংক তহবিল। ২০১৭ সালের আগস্টে নেইমার পিএসজিতে চলে যাওয়ার পর থেকে সেই যে নতুন খেলোয়াড় কেনার উৎসব শুরু করেছে বার্সেলোনা, সেই উৎসবের রঙ এখন আরও গাঢ়! খেলোয়াড় কেনার ক্ষুধাটা এতোটাই প্রবল যে, গত ১৫ দিনে বার্সেলোনা দলে টেনেছে ৪ জনকে।

সব মিলে নেইমার চলে যাওয়ার পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের আগস্টের পর থেকে গত দেড় বছরেই নতুন খেলোয়াড় ক্রয়ের পেছনে বার্সেলোনার খরচ ৫৩৩ মিলিয়ন ইউরো! এতো কম সময়ে খেলোয়াড় ক্রয়ে এতো টাকা বিশ্বের কোনো ক্লাবই কখনো খরচ করেনি। এতো টাকা খরচের কথা চিন্তাও করতে পারেনি!

বার্সেলোনা শুধু চিন্তা করা নয়, বাস্তবে করেও দেখিয়েছে। এই জানুয়ারিতে যে ৪ জনের সঙ্গে চুক্তি করেছে, তার মধ্যে দুজনকে নিয়ে এসেছে ধার চুক্তিতে। বাকি দুজনকে কিনেছে পাকাপাকিভাবে। স্থায়ী চুক্তির দুজনের সর্বশেষ জন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়াং। ২১ বছর বয়সী এই ডাচ মিডফিল্ডারের পেছনেই বার্সেলোনা খরচ ৮৬ মিলিয়ন ইউরো। এর মধ্যে নগদই দিতে হয়েছে ৭৫ মিলিয়ন ইউরো। বাকি ১১ মিলিয়ন ইউরো গুণতে হবে বিভিন্ন শর্ত সাক্ষেপে।

গত বছরও জানুয়ারির শীতকালীন উইন্ডোটা একাই গরম করে রেখেছিল বার্সেলোনা। বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে লিভারপুল থেকে কিনেছিল ফিলিপে কুতিনহোকে। এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়ায় ১৬০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিতে। জানুয়ারির দলবদল ইউন্ডোর ইতিহাসেই এটা ছিল সর্বোচ্চ চুক্তির রেকর্ড।

এবারও জানুয়ারির শীতকালীন উইন্ডোটা একাই গরম করে রেখেছে বার্সা। ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে, জানুয়ারির শীতকালীন উইন্ডো বুঝি বার্সেলোনার জন্যই! সব মিলে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের দুই জানুয়ারিতেই নতুন খেলোয়াড় ক্রয়ে বার্সার মোট খরচ প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো! এর মধ্যে নগদই খরচ হয়েছে ২০৭ মিলিয়ন ইউরো। ভাবা যায়!

মজার ব্যাপার হলো, তবু বার্সেলোনার ক্ষুধা মেটেনি। তাদের আরও খেলোয়াড় কেনা চাই। এরই মধ্যে ডি লিট নামের নেদারল্যান্ডসের এক তরুণ তুর্কিকে পছন্দও করে ফেলেছে বার্সা! ডি ইয়াংয়ের সঙ্গে চুক্তির পরপরই নাকি তার স্বদেশি ডি লিটের সঙ্গে চুক্তির প্রাথমিক পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে বার্সা। বার্সার ক্ষুধু কবে যে মিটবে।