গজব পড়বে, ফাঁসির দণ্ড পেয়ে বাবরের অভিশাপ

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ড পেয়ে বিচার সংশ্লিষ্টদের অভিশাপ দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বলেছেন, যারা এই দণ্ড দিয়েছেন তাদের ওপর ‘গজব পড়বে’।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট যে গ্রেনেড দিয়ে হামলা চালানো হয়, সেগুলো বাবরই জঙ্গিদের হাতে তুলে দেন বলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেছেন মুফতি আবদুল হান্নান। জানান, হামলার আগে মোট তিনটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সে সময়ের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হন বাবর। আর তিনি এই মামলার আসামি হন ২০১১ সালে। ওই বছর আদালতে সম্পুরক অভিযোগপত্রে যে ৩০ জনকে নতুন করে আসামি করা হয় তাদের মধ্যে ছিল তার নাম।

২০১২ সালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বাবরসহ ৫২ আসামির বিচার শুরু হয়। রায় ঘোষণার দিন সকালে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে আনা হয় ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ। বিচারক শাহেদ নূর উল্লাহ বেলা ১১টা ৩৮এ রায় পড়া শুরু করেন। শেষ হয় ১২টার দিকে।

সাদা রঙের একটি ফতোয়া এবং চশমা পরা বাবর তখন অন্য আসামিদের সঙ্গে ছিলেন কাঠগড়ায়। ভেতরে পুলিশ সব আসামিকে ঘেরাও করে রাখে।

রায় ঘোষণার সময় পুরোটা সময় বাবরসহ সব আসামি ছিলেন নিরব। আর শেষ পর্যায়ে বিড়বিড় করে প্রতিক্রিয়া জানান।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহ বিচার করবেন, যারা এই বিচার করেছে, তাদের ওপর গজব পড়বে।’

নিজেকে নির্দোষও দাবি করেন বাবর। বলেন, ‘আমি তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার কথা বলিনি বলে এই সাজা দেয়া হয়েছে।’

রায় ঘোষণার পর গাড়িতে করে কারাগারে যাওয়ার সময় সবার উদ্দেশ্যে হাতও নাড়ান বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে তুমুল সমালোচিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

এই মামলা নিয়ে বাবর ফাঁসির দণ্ড পেয়েছেন দ্বিতীয়বার। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারিও ফাঁসির দণ্ড পান তিনি। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ আ স ম কিবরিয়া হত্যা মামলায়ও তার বিচার চলছে। এখানেও দোষী প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে তার।

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেও সাজা পেয়ে বিচারককে অভিশাপ দিয়েছিলেন বাবর। কাঠগড়ায় সেদিন তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘এই বিচারে আমি ন্যায়বিচার পাইনি। এই বিচারকের পরও বিচারক আছেন। তিনি আল্লাহ। আখেরাতে আমি সেই বিচারকের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাব।’