গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন : আষাঢ়েও কেন বৃষ্টির দেখা নেই?

আষাঢ় মাসের বৃষ্টি-বাদল নিয়ে একশো উনিশ বছর আগে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন – “নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে/ ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে”। অথচ এ বছর এই আষাঢ় মাসেই এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি খুঁজছেন অনেকে।

সাধারণত ইংরেজি জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই এর মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলা আষাঢ় মাসের স্থায়িত্ব।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে জুন মাসে গরম বেশি পড়ছে। ফলে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন।

“আমার ছোট বাচ্চা। বড়রাই গরম সহ্য করতে পারছি না। সেক্ষেত্রে ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যা হচ্ছে,” বলছিলেন ঢাকার একজন বাসিন্দা রুম্পা জাহান।

কতটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “একবার গরমে ঘামছে আবার মুছিয়ে দিচ্ছি। এটাতে ঠান্ডা-গরম লেগে বাচ্চার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”

রুম্পা জাহানের মত গরমে ভুক্তভোগী অনেকেই।

তবে দেশের দুই একটি স্থানে বৃষ্টিপাত হলেও তার স্থায়িত্বকাল খুব কম। আর তাই বৃষ্টিপাতের ফলে যে স্বস্তি ফেরার একটা আশা মানুষের মধ্যে জেগে উঠছে, সেটা ক্ষণিকেই মিলিয়ে যাচ্ছে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুব কম হলেও উত্তরের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে অধিদপ্তর বলছে।

আষাঢ় মাসেও কেন বৃষ্টি হচ্ছে না?

সাধারণত বছরের জুন মাসে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান খান বলছিলেন, “বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণ যে পরিমাণ শক্তিশালী হয়ে মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করা দরকার, সেই পরিমাণ শক্তিশালী হয়ে প্রবেশ করেছে না।”

“যার ফলে জুন মাসে আগের মত এই বছর বৃষ্টি হচ্ছে না।”

তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, আরো দুই দিন গরম থাকবে। তারপর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

জুনের মাসের শেষের কয়েকটা দিন এভাবেই কাটবে। তবে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা অনেকটা সহনশীল হবে বলে জানিয়েছেন মি. খান।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর পর্যবেক্ষণ বলছে, অন্যান্য বছর গুলোতে জুন মাসে সারাদেশের তাপমাত্রা গড়ে ৩২ থেকে ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। এবারে সেটা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস হচ্ছে।