গাজীপুরে ‘ব্লু হোয়েল’-এর কথা শুনে হাত কেটেছে স্কুলছাত্র!

অনলাইনভিত্তিক গেম ‘ব্লু হোয়েল’ খেলে নয়, বন্ধুদের কাছে শুনে এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে এক স্কুলছাত্র তার হাত কেটে মাছ এঁকেছে বলে জানা গেছে। তার বাড়ি শ্রীপুর পৌর এলাকার বেড়াইদের চালা গ্রামে। তার বাবা কৃষক। স্থানীয় স্কুলে সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।

স্কুলের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, সোমবার স্কুলের এক শিক্ষিকা ক্লাস নেওয়ার সময় রাকিবের বাম হাতে ব্যান্ডেজ দেখতে পান। এ কথা শুনে স্কুলের শিক্ষকরা রাকিবের কাছে গিয়ে ব্যান্ডেজের কারণ জানতে চান। জবাবে সে জানায় ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটে ব্লু হোয়েলের ছবি এঁকেছে। এ সময় সে অসংলগ্ন কথা বলে। শিক্ষকরা পরে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

এদিকে, ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছে ওই ছাত্র, এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন তাকে এক নজর দেখার জন্য তাদের বাড়িতে রাত পর্যন্ত ভিড় জমায়। তবে এ ঘটনায় অভিভাবকসহ স্থানীয়রা নতুনভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তাদের মতে, এখন যদি অনলাইন সুইসাইড গেম ব্লু হোয়েল না খেলে শুধু ওই গেমের প্রেমে পড়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে বিষয়টি সবাইকে নতুন করে আতঙ্কিত করে তুলবে।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান রানা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ছাত্রের বাসায় যায়। পরিবার ও ছাত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সে কিছুটা ভারসাম্যহীন ও প্রচণ্ড জেদি। প্রায়ই সামান্য কারণেই বাড়ির বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে সে। মায়ের সঙ্গে রাগ করে কয়েকদিন আগে নিজের মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলে। নতুন মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে তার মনে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এরই মধ্যে বন্ধুদের কাছে ‘ব্লু হোয়েল’ সম্পর্কে শুনে এর প্রতি আকৃষ্ট হয় সে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ার ক্ষোভে সে গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির নিজ কক্ষে বসে ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটে ওই স্কুলছাত্র তার স্বপ্নের ‘ব্লু হোয়েল’-এর ছবি আঁকে। পড়ে বাড়ির লোকজনের দৃষ্টি এড়াতে হাতে ব্যান্ডেজ করে সে। তবে বন্ধুদের কাছে হাত কাটার বিষয়ে একেকবার একে কথা বলে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলেও সে একেকবার একেক কথা বলে জবাব দেয়। তবে ঘটনাটি ব্লু হোয়েল গেম খেলতে গিয়ে ঘটেনি। এ বিষয়ে গেম যে সে খেলেছে তার কোনো তথ্য প্রামাণও পাওয়া যায়নি। তবে তাকে নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা করানোর জন্য তার পরিবারের সদস্যদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্কুলছাত্রের মা জানান, এক বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে স্কুলছাত্রটি সবার ছোট। সে জেদি স্বভাবের। রাগ উঠলে সে বাড়ির সব কিছু ভাঙচুর করে। তাকে পারিবারিকভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।