গুগল ডুডলে ভারতীয় মহীয়সী

বম্বে ইউনিভার্সিটির তিনিই প্রথম ভারতীয় নারী স্নাতকধারী। ভারতের প্রথম নারী হিসেবে তিনিই প্রথম কোনও ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।

অক্সফোর্ডে আইন পড়া নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম।

ভারতের প্রথম নারী আইনজীবী তো বটেই। ভারত ও ব্রিটেনে সমান্তরালভাবে ওকালতি করার ক্ষেত্রেও তিনিই প্রথম নারী। তিনি কর্নেলিয়া সোরাবজি। আজ তার জন্মদিনে ডুডলে শ্রদ্ধা গুগলের।

জন্ম ১৮৬৬ সালের ১৫ নভেম্বর, নাসিকে। বাবা রেভারেন্ড সোরাবজি কারসেদজি ছিলেন একজন মিশনারী। মা ফ্রান্সিনা ফোর্ডের বেড়ে ওঠা আবার ব্রিটিশ ঘরানায়। এক ব্রিটিশ দম্পতি তাকে দত্তক নিয়েছিল।

মা-বাবার কারণেই তাদের পরিবারটি ছিল অন্যরকম।

শিক্ষা-দীক্ষা, রুচি-সম্ভ্রম সব কিছুতেই পরিবারের এই স্বতন্ত্র পরিবেশ ছোটবেলা থেকে কর্নেলিয়াকে অন্যরকমভাবে তৈরি করেছিল। পেয়েছিলেন পরিশীলিত মনন ও মেধার উত্তরাধিকার। যার ফলশ্রুতি পরবর্তী জীবনের সাফল্য।

কর্নেলিয়ার মা পুণেতে নারী শিক্ষার প্রসারে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। অন্যদিকে বাবা মিশনারী হওয়ার কারণে বম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কর্নেলিয়া। বাকিটা তার মেধা, জেদ ও পরিশ্রম। আর তাই একের পর এক সাফল্য অর্জন করেছেন। শুধু সাফল্য বললে কম বলা হয়, প্রতিটিই ছকভাঙা। প্রথম নারী হিসেবে তিনি নজির গড়েছেন। অর্থাৎ এর আগে যা কেউ ভাবতে পারেননি, তা তিনি করেছেন। ভারতের নারীদের মুক্তির পথ দেখাতে পেরেছেন।

আইনজীবী হিসেবেও নিজের সমাজসেবার লক্ষ্য থেকে চ্যুত হননি। বহু নারী ও অনাথ বাচ্চাদের হয়ে তিনি মামলা লড়েছেন। এই কলকাতাতেও প্র্যাকটিস করেছেন। বলাবাহুল্য পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তাকে সহজে মেনে নেয়নি। কোণঠাসা করে দেওয়ার নানা ছক কষা হয়েছে। কিন্তু দমেননি কর্ণেলিয়া। নিজের জেদে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকেও সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও পরের দিকে হিন্দু গোঁড়ামি, জাতীয়তাবাদের নামে বৈচিত্র ধ্বংসের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন।

সব মিলিয়ে বর্ণময় কর্মজীবন। ঈর্ষণীয় সাফল্য। তবে ভারতে নারীর ক্ষমতায়ন ও মুক্তির ক্ষেত্রে তিনি যে অন্যতম আলোর দিশারী, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।