গোল করলেন জেসুস-সান্দো, নায়ক নেইমার

আর্জেন্টিনা ১৬ অক্টোবরের প্রস্তুতি সেরেছে ইরাকের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয় দিয়ে। ব্রাজিলের প্রস্তুতিটা ততটা ভালো হলো না। তবে তিতের দলও ১৬ অক্টোবরের মহারণের প্রস্তুতি জয় দিয়েই সম্পন্ন করল। গতকাল শুক্রবার রাতে রিয়াদে স্বাগতিক সৌদি আরবকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল। রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়ামের আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিলের হয়ে গোল দুটো করেছেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও অ্যালেক্স সান্দো।

কিন্তু তাদের দুজনকে ছাপিয়ে মাঠের নায়ক ছিলেন অধিনায়ক নেইমার। দুটো গোলই বানিয়ে দিয়েছেন পিএসজি তারকা। ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণ করে যায় ব্রাজিল। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারছিল না কিছুতেই। কখনো সৌদি আরবের রক্ষণ, কখনো গোলরক্ষক ব্রাজিলের আক্রমণ প্রতিহত করেছেন। কখনো আক্রমণ ফিনিশিং দিতে ব্যর্থ হয়েছেন নেইমার-জেসুসরা। প্রতিপক্ষের গোলমুখে ১৫টি শট নিয়ে মাত্র ৫টি লক্ষ্যে রাখাটা সে কথাই বলে।

বিশ্বকাপ ব্যর্থতাকে চাপা দিয়ে নতুন করে শুরু করেছে ব্রাজিল। এখনো পর্যন্ত তাতে শতভাগ সফলও তিতের দল। বিশ্বকাপের পর তিনটি প্রীতি ম্যাচের ৩টিতেই জয় অন্তত সে কথাই বলে। কিন্তু আসলেই কি শতভাগ সফল ব্রাজিল? গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও এল সালভাদরের বিপক্ষে জয় নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্টই ছিলেন ব্রাজিল কোচ। কিন্তু গতকাল সৌদি আরবের বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সে একদমই খুশি নন তিতে।

ম্যাচ শেষে নিজের হতাশাটা প্রকাশ্যেই উগড়ে দিয়েছেন ব্রাজিল। বলেছেন, ‘ম্যাচের শুরু থেকেই আমরা সেভাবে পারফর্ম করতে পারিনি, যেমনটা আমরা চেয়েছিলাম। এই দলটির মান অনুযায়ী মাঠের পারফরম্যান্স ছিল নিচু মানের। আমাদের আরও ভালো খেলতে হবে, আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে, আরও বেশি মনোযোগ দেখাতে হবে। সত্যিই স্বাভাবিকের তুলনায় আমাদের আজকের পারফরম্যান্স ছিল নিচু মানের।’

জয়ের পরও ব্রাজিল কোচের এই শঙ্কার কারণটা সহজেই অনুমেয়। ৪ দিন পরই চিরশত্রু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচ। হোক প্রীতি ম্যাচ, আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়া মানেই মর্যাদার লড়াই। সেই মর্যাদার লড়াইয়ের আগে দলকে হয়তো আরও বেশি তাঁতিয়ে দেওয়ার চেষ্টাই করলেন তিতে। পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে দলের খেলোয়াড়দের ভালো খেলার ক্ষুধাটা জ্বেলে দেওয়ার চেষ্টাই হয়তো করলেন।

নয়তো ব্রাজিল কোচ যতটা নিচু মানের বলে আখ্যায়িত করলেন নেইমারদের মাঠের পারফরম্যান্স ততটা খারাপ ছিল না। অনেকবারই হয়তো আক্রমণে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে। তবে জয়ের ক্ষুধাটা ছিল স্পষ্টই। সৌদি গোলরক্ষক অতিমানবীয় হয়ে না উঠলে জয়ের ব্যবধানটাও আরও বড় হতে পারত।

যাই হোক, ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ সৌদে আরবকে চেপে ধরলেও ব্রাজিল প্রথম গোল পায় ৪৩ মিনিটে। ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের প্রথম এগিয়ে দেন চোটের কারণে আগের ম্যাচ দুটিতে না খেলা জেসুস। নেইমার অসাধারণ পাস থেকে বল জালে জড়িয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেছে ব্রাজিল। কিন্তু পারেনি। সৌদি আরবের রক্ষণভাগ দারুণ দক্ষতার সঙ্গেই নেইমার-জেসুস-সান্দ্রোদের আক্রমণ প্রতিহত করে গেছে। তবে রুখে দেওয়ার সেই লড়াইয়ে ৮৫ মিনিটে একটু ধাক্কা খায় সৌদি আরব। সরাসরি লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সৌদি আরবের মোহামেদ আল ওয়াইজ। ১০ জন নিয়েও ম্যাচের বাকি সময়টুকু সমানতালেই লড়াই করেছে সৌদি। তবে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগে আগে নেইমারের কর্নার থেকে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড অ্যালেক্স সান্দো।