গ্যাস সংকট : দুপুরে চুলা জ্বলে না মোহাম্মদপুর-আদাবরে

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলছে গ্যাস সংকট। দুপুরের পর ছাড়া স্বাভাবিক মাত্রায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ছে বেশ কিছু এলাকায়। ফলে রান্নার কাজ করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন গৃহিণীরা। এমনকি অনেকে বাধ্য হয়ে দুপুরের খাবারের জন্য নির্ভর করছেন রেস্তোরাঁর উপর। তবে রোজাতে রান্নার কাজ বেশি থাকে বলে গ্যাসের দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবরের বেশ কিছু এলাকায় গ্যাস সমস্যা প্রকট। সকাল সাতটা থেকে দুপুর দুইটা অবধি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এসব এলাকায়। এসময় গ্যাসের চুলা নিভু নিভু জ্বললেও তাতে রান্না করা যাচ্ছে না।

গ্যাসের এমন সংকট নিয়মিত হয়ে পড়ায় বিরক্ত এখানকার বাসিন্দারা। মোহাম্মদপুর চানমিয়া হাউজিং এলাকায় গৃহিণী শামসুননাহার বলেন, ‘সকাল থেকে গ্যাস থাকে না। নাস্তা তৈরি করা যায় না। নাস্তা বানাতে হলে ভোররাতে উঠে পড়তে হয়। আবার দুপুরে যে রান্না করবো সে উপায়ও নেই। সকালে গিয়ে গ্যাস আসছে বিকালের দিকে। একারনে ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেক সময় বাইরে গিয়ে খাবার খেতে হচ্ছে।’

একই অবস্থা মোহাম্মদীয়া হাউজিং, নবোদয় হাউজিং, সেকেরটেক, আদবর, শ্যামলী হাউজিং, ঢাকা হাউজিং, মুনসুরাবাদ এলাকার বেশ কিছু জায়গায়। এসব এলাকায় দুপুরের আগে গ্যাস না আসায় অনেকেই আগের দিন রাতেই রান্না করে রাখছেন পরদিন দুপুরের খাবার।

আদাবর ১০ নম্বর রোডের বাসিন্দা সুমি আক্তার বলেন, ‘আগের দিন রাতে রান্না করে রাখি। সেটাই পরদিন দুপুরে খেতে হয়। খাবারটা যে গরম করে খাবো, সে উপায়টাও নেই।’

গ্যাসের আকাল দেখে তিনি এখন সিলিন্ডার গ্যাস কেনার চিন্তা করছেন। কিন্তু লাইনে গ্যাস না থাকলেও তো গ্যাসের বিল দিতে হয়। এটা নিয়েও চিন্তিত এই গৃহিনী।

নিয়মিত গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না কিন্তু বাধ্য হয়ে তিতাস ও সিলিন্ডার উভয়ের বিল গুনছেন, এমন লোকের সংখ্যাও কম নয়। মোহাম্মদীয়া হাউজিং এলাকায় বাসিন্দা রেজাউল করিম জানান, দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকে না, এটা এখন সবাই জানে। সমস্যা এক-দুইদিন মানা যায়। মাসের পর মাস একই অবস্থা। তাই বাধ্য হয়ে বাসায় একটা সিলিন্ডার নিতে হয়েছে। বাসায় বৃদ্ধা মা আছেন, বাচ্চারা আছে, তাদের কথা ভেবেই সিলিন্ডার নিলাম। আবার দুইদিকে বিল দিতে হচ্ছে বলে আর্থিক ক্ষতিরও মুখোমুখি হচ্ছি।’

এ এলাকায় গ্যাস সংকটের বিষয়টা নজরে আছে তিতাসের। সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন তিতাস কর্মকর্তারা। এমন দাবি করে তিতাস (ঢাকা উত্তর) প্রকৌশলী এনামুল হক ভূঁইয়ার।

জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কোথাও কোথাও গ্যাসের লাইনে সমস্যা হচ্ছে এটা আমরা জানি। এটা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি। প্রতিদিনই আমাদের লোক কাজ করছে। গ্যাসের লাইনে পানি ঢুকে যাওয়ায় এই সমস্যা হয়েছে।’

যদিও গ্যাসের এই সংকটকে বেশ কিছু বিষয়কে দায়ী করছেন তিতাসের কেরানীগঞ্জ অঞ্চলের একজন ঠিকাদার মো. শামীম। তিনি জানান, ‘কিছু কিছু বাসাবাড়ি বেশ উঁচু। আট তলা, দশ তলা। এসব বাসায় গ্যাস একটু কম যাবে। আবার নিজের চাহিদা মতো গ্যাস পাওয়ার জন্য অনেকে এক ধরণের কম্প্রেসার ব্যবহার করছে। যা লাইনের সব গ্যাস টেনে এনে তাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। একারণে আশপাশের লাইনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ কমে আসে। কম্প্রেসার ব্যবহার করে চুলা জালানো অবৈধ। কিন্তু কিছু কিছু লোক তাই করছে।’সৌজন্যে : ঢাকাটাইমস