গ্রামীণফোনের কর ফাঁকি-প্রতারণা-দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র

মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে নতুন করে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা -বিটিআরসি’র এক অডিটে দুর্নীতির এ-ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে।

ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাস-এর বিভিন্ন সেবা খাতে কর ফাঁকি ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগও পাওয়া গেছে গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের প্রতিকারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি।

সরকারের প্রায় ১১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণ ফোন। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির নিয়োগ করা অডিট প্রতিষ্ঠান অপারেটরের ইনফরমেশন সিস্টেমে বিপুল পরিমাণ এ আর্থিক দুর্নীতি সনাক্ত করে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গ্রামীণ ফোনের কাছে বিটিআরসি’র পাওনা ৭ হাজার ৪৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। আর ভ্যাট বাবদ রাজস্ব বোর্ড পাবে আরও ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, এখনো আমরা চিঠিপত্র দেয়নি। দুই এক দিনের মধ্যে চিঠি পাঠাবো আমরা। ৩০ শতাংশ রাজস্ব বিভাগ পাবে। ৭০ শতাংশ আমরা পাবো।

পাওনা আদায়ের উদ্যোগ নিতে এনবিআরকে চিঠি দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এসব অভিযোগের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গ্রামীণের পক্ষ থেকে ই-মেইল জবাবে বলা হয়, ‘বিষয়টি অনিষ্পন্ন অবস্থায় আছে’।

গ্রামীণ ফোনের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তুলেছে ভ্যাল্যু অ্যাডেড সার্ভিস বা ভ্যাসের কন্টেন্ট প্রোভাইডাররাও। সংবাদ সেবা, বিনোদন ও ভর্তি তথ্য ও অন্যান্য সেবা মোবাইলে গ্রাহকদের কাছে পাঠানো এসএমএস সংখ্যার হিসেবে গরমিল দেখিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে।

এসএমএস হিট এর সংখ্যা অনেক কম দেখিয়ে এসব কোম্পানির সেই সাথে সরকারেরও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে নতুন করা নীতিমালার আলোকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিটিআরসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রোভাইডাররা।

রূপকথা প্রোডাকশনের কর্ণধার এনামুল কবির সুজন বলেন, যদি সবকিছু ভাল থাকে কিন্তু হুট করে পরে গেলেই তো বুঝতে হবে এর মধ্যে কিছু একটা হয়েছে।১ লাখ মানুষের কাছে ১ টাকা করে নিলে ১ লাখ টাকা হবে। কোন না কোন ভাবে অবিশ্বাসযোগ্য কাজ করা হয়েছে।

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বকেয়া বা ফাঁকি দেয়া কর আদায়ের পদক্ষেপ নিলেই তারা মামলা ঠুকে দেয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিট থেকে জানা যায়, গ্রামীণ ফোনের কর আদায় সংক্রান্ত এমন ১০টি মামলা এখনো চলমান আছে আপীলাত ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টে। এসব মামলায় আটকে যাওয়া রাজস্বের পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকার বেশি।