গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয়পর্বে বাংলাদেশের মেয়েরা

রোববার ভিয়েতনামকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় পর্বে উঠে গেছে বাংলাদেশ।

ম্যাচে নামার আগে ‘এফ’ গ্রুপে পয়েন্ট, গোলসংখ্যায় সমান সমান অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। কিন্তু বল পায়ে যে এগিয়ে বাংলাদেশ, সেটা প্রমাণ হয়ে গেল মাঠেই। পায়ের কারুকাজ, স্কিল, স্ট্যামিনায় ভিয়েতনামকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় পর্বে তাই লাল-সবুজের মেয়েরা।

কমলাপুরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ভিয়েতনামকে হারানোর পর ‘এফ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যদের পয়েন্ট দাঁড়ায় ১২। এখন চ্যালেঞ্চ দ্বিতীয় পর্বের। সেখানেও থাকছে আরেকটি বাছাইপর্ব। ছয় গ্রুপের সেরা ৬ দলের সঙ্গে সেরা দুই রানার্সআপ মিলে আট দল দুই ভাগে ভাগ হয়ে খেলবে সুপার এইট পর্ব। যেখানে দুই গ্রুপের সেরা চার দলের সঙ্গে নর্থ কোরিয়া, সাউথ কোরিয়া, জাপান ও স্বাগতিক থাইল্যান্ডকে নিয়ে হবে চ্যাম্পিয়নশিপের মূলপর্ব।

আরব আমিরাতের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক পাওয়া আনুচিং মগিনিকে মূল একাদশের বাইরে রেখেই ভিয়েতনামের বিপক্ষে দল সাজান লাল-সবুজ কোচ গোলাম রব্বানী। একাদশে ফেরেন আগের ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়া অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা চাকমা।

শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচে দাপটের সঙ্গেই শুরু হয় স্বাগতিকদের। পঞ্চম মিনিটে বামপ্রান্ত দিয়ে ঋতুপর্ণার বুলেট গতির শট ডানবার দিয়ে হয়েছে লক্ষ্যভ্রষ্ট। দুই মিনিট বাদেই এ ডিফেন্ডারের আরেকটি শট ঠেকিয়ে দেন ভিয়েতনাম গোলরক্ষক।

ম্যাচে স্পষ্ট আধিপত্য থাকার পরও ভিয়েতনামের খেলোয়াড়দের রক্ষণাত্মক খেলায় গোলটাই পাওয়া হচ্ছিল না বাংলাদেশের। শেষপর্যন্ত দেয়াল যখন ভেঙ্গেছিল স্বাগতিকরা, সেই গোলও বাতিল হয়ে যায়। সাজেদার কল্যাণে ৩৭ মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়র দারুণ এক গোল করলেও একক সিদ্ধান্তে সেই গোল বাতিল করে বিতর্কের জন্ম দেন অস্ট্রেলিয়ান রেফারি।

এতেও দমে যায়নি লাল-সবুজের মেয়েরা। বরং প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের এক গোলে স্বাগতিকদের এগিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন। প্রথমে তার নেয়া শট প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের হাত ফস্কে গেলে আলতোভাবে শট নেন শামুসন্নাহার জুনিয়র। সেই শট মাথা ছুঁয়ে জালে জড়িয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন জার্সি নাম্বার-১০ তহুরা।

দ্বিতীয়ার্ধেও মাঠে ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য। ৫৬ মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ঋতুপর্ণার বাঁ-পায়ের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর তহুরা ভলি করে দ্বিতীয়বারের মতো জালে বল জড়ালে আবারও অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করে দেন রেফারি।

গোল বাতিল হওয়ার পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ফল, দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যাওয়া স্বাগতিকদের। ৬৪ মিনিটে মারিয়ার কর্নার কিক শামসুন্নাহার জুনিয়রের হেডে বারে লেগে ফিরলে, ফিরতি বলে শট নেন আঁখি। ভিয়েতনাম গোলরক্ষক সেই শট ফিরিয়ে দিলেও হাতে রাখতে পারেননি। তাতে দ্বিতীয়বারের শট নিয়ে লাল-সবুজ দর্শকদের গোলের আনন্দে ভাসান আঁখিই।

ম্যাচে ৮৫ মিনিটে আবারও বল জালে জড়িয়েছিলেন তহুরা। তবে তৃতীয়বারের মতো অফসাইডের বাঁশি বাজিয়ে বাংলাদেশের গোলব্যবধান বড় হতে দেননি অস্ট্রেলিয়ান রেফারি ক্যাথেরিন জেসউইচ।