চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসসহ (বিসিএস) সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কার করে তা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে চাকরি প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার বেলা ১১টায় পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।

একই দাবিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২৫ ফেব্রুয়ারি তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপিও প্রদান করেন। ওইদিন পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আজকের এ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়।

কর্মসূচি পালনে আজ সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা গ্রন্থাগারের মূল ফটকের সামনে পাঁচটি চেয়ার বসিয়ে ‘কোটায় সংরক্ষিত’ লিখে রাখে। এর মধ্যে চারটি চেয়ার খালি রাখা হয়, আর একটি চেয়ারে প্রতীকী এক কোটাধারী গলায় ৫৬% কোটা লেখা প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে পায়ের ওপর পা রেখে কানে হেডফোন লাগিয়ে চা-সিগারেট খাচ্ছেন। আর কোটস্যুট পরা একজন মেধাবী চেয়ারগুলোর একপাশে সার্টিফিকেটের ফাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার গলায় ঝুলানো ৪৪% মেধা। এরপর সেখান থেকে মিছিলসহকারে শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নেন।

অবস্থান কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন পোস্টার ফেস্টুনে ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, কোটা বৈষম্যের ঠাঁই নেই’, ‘ইহা কোটা নয়, বৈষম্য’, ‘কোটা দিয়ে আমলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই’ ‘১০% এর বেশি কোটা নয়’ স্বাধীনতার মূলমন্ত্র কোটা প্রথার সংস্কার কর’ ইত্যাদি লেখা বিভিন্ন পোস্টার-প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন। অনেকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে আসেন। তারা বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত গেঞ্জি পরে কোটা সংস্কারের দাবি জানায়।

এ সময় আন্দোলনকারীদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, সিভিল সার্ভিস কমিশনে যোগ্যতা ছাড়াও শুধুমাত্র কোটার কারণে তারা নিয়োগ পাচ্ছে। এটা লাখ লাখ বেকারের সঙ্গে একধরনের প্রতারণা। আমরা কোটার বিরুদ্ধে নই, কোটা থাকুক। তবে সেটা ১০% এর বেশি নয়।’

আন্দোলনকারীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- কোটা ব্যাবস্থা সংস্কার করে ৫৬% থেকে কমিয়ে ১০% করা; কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্য থাকা পদসমূহে মেধায় নিয়োগ দেয়া; কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা নয়; সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ এবং নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যাবহার না করা।