চালু হয়নি ‘হ্যালো’ অ্যাপ, অটোচালকদের ‘ধোঁকাবাজি’!

ঘোষণা দিয়েও চালু হয়নি সিএনজিচালিত অটোরিকশার রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘হ্যালো’। এই সেবা চালুর জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, চালকরা মিটারে যাওয়া এবং সেখান থেকে কমিশন দেয়ার বিষয়ে রাজি না হওয়ায় কারণেই সেবাটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।

গত ১ মার্চ অটোরিকশার রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘হ্যালো’ চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে নানা জটিলতায় তা চালু করা সম্ভব হয়নি। যদিও ‘হ্যালো’ অ্যাপ চালুর নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে আগামি পয়লা বৈশাখ।

অ্যাপভিত্তিক গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাড়ার সেবা ‘উবার’, ‘পাঠাও’-এর ‘ঝড়ে’ সিএনজিচালকরা অনেকটাই বেকায়দায়। মিটারে যেতে না চাওয়া, ইচ্ছামতো গন্তব্যে না যাওয়াসহ নানা নৈরাজ্যের কারণে অটোরিকশার প্রতি ‍মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে যাত্রীদের একটি বড় অংশ।

আর এতে ভাড়া কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়ার পর সিএনজিচালিত অটো মালিকরা ‘উবার’ ‘পাঠাও’-এর মতোই অ্যাপে সেবা দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

এ জন্য ‘টপ আই আই’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিকরা। গত ১৬ জানুয়ারি এই প্রতিষ্ঠানটি সংবাদ সম্মেলন করে ১ মার্চ থেকে রাজধানীতে অ্যাপে অটোরিকশা চালুর ঘোষণা দেয়।

‘টপ আই আই’-এর মুখপাত্র অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী সেদিন বলেন, ‘হ্যালো’-এর মাধ্যমে রাজধানীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যে হয়রানি ছিল এর সমাধান হবে। সরকারি নীতিমালার ভিত্তিতেই এই অ্যাপ চলবে, সেখানে যে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে সেভাবেই মিলবে এই সেবা।’

কিন্তু নির্ধারিত তারিখের এক সপ্তাহেরও বেশি পার হয়ে গেলেও হ্যালো অ্যাপে কোনো সিএনজি অটোরিকশা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘হ্যালো’র বিপণন বিভাগের পরিচালক রাকিবুল হাছান জানান, চালকদের সঙ্গে ভাড়ার বিষয়টি সমোঝতা না হওয়ায় সেবাটি চালু করা হয়নি।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ভাড়া নেয়ার কথা জানিয়েই সেবাটি চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তখন চালকদের সঙ্গে কথা না বলেই এই কথা জানানো হয় কি না-এমন প্রশ্নে রকিবুল বলেন, ‘তাদের সাথে আমাদের আলাপ আলোচনা সমঝোতায় পৌঁছেছে, আগামী পহেলা বৈশাখ হ্যালো পুরোদমে চালু হবে।’

রাকিবুল বলেন, ‘আমরা চেয়েছি যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করতে। আমাদের কমিশন ড্রাইভারদের কাছ থেকে নেব, কিন্তু সেটি তারা দিতে রাজি ছিল না। পরে অবশ্য তাদের আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চললে আগের চেয়ে আয় ভালো হবে।’

টপ আই আই এর কর্মকর্তা বলেন, ‘পুরোদমে চালু না হলেও কয়েকজন চালক অ্যাপে সিএনজি অটোরিকশা চালাচ্ছেন। এতে তাদের ট্রিপের পাশাপাশি আয়ও বেশি হচ্ছে। এতে সেই চালকরা সন্তুষ্ট। তাদের অভিজ্ঞতা আমরা অন্য চালকদেরকে জানিয়েছি। আশা করি, আগামী পহেলা বৈশাখ আমরা আমাদের হ্যালো পুরোপুরে চালু করতে পারব ‘

রাজধানীতে যাত্রীর ইচ্ছামত গন্তব্যে যাওয়া এবং মিটার অনুযায়ী ভাড়া নেয়ার শর্তে চালু হয়েছিল সিএনজিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই শর্ত অমান্য করে নিজের ইচ্ছামত গন্তব্যে যাওয়া, নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত দাবি করার কারণে যাত্রীদের বিরক্তির কারণ হয় অটোরিকশা চালকরা।

দুই দফা বাড়িয়ে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ করার পরও তাদের অযুহাতের শেষ নেই। মিটারের বদলে ইচ্ছামত ভাড়ায় যাত্রীদেরকে যেতে বাধ্য করত তারা। এ কারণে তাদের প্রতি জনক্ষোভ ছিল স্পষ্ট।