‘চীন-রাশিয়া সরাসরি বাংলাদেশের বিপক্ষে’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ও রাশিয়া সরাসরি বাংলাদেশের বিপক্ষে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন। এছাড়া এই ইস্যুতে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছিলেন মিয়ানমারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তিতে তার উল্লেখ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্ট্রাডিজ (বিস) মিলনায়তনে ‘বৈশ্বিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের ৫০ বছর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।

কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিকাবের ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদুর রহমান, বিসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফায়েজ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সবার আগে দেশের স্বার্থ দেখতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সাফল্য কম। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে যে সমাধানের কথা উল্লেখ করেছিলেন, পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের করা চুক্তিতে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। এটা আমাদের ব্যর্থতা।’

সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই ইস্যুতে চীন ও রাশিয়া সরাসরি আমাদের বিপক্ষে। এই দুই দেশের সঙ্গে আমাদের অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু আমরাই লাভবান হচ্ছি, বিষয়টি এমন নয়। এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ওই দেশগুলোও লাভবান হচ্ছে।

ঢাকার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই দুই দেশ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

প্রতিবেশি ভারত প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বেশিরভাগ সময়ই বলে থাকি ভারত আমাদের অনেক ভালো বন্ধু এবং অনেক উপকার করছে। বাস্তবতা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক যাচ্ছে এটা সত্য, কিন্তু ভারত কি আমাদের অনেক কিছু দিয়ে দিচ্ছে? বলা হয়, স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ভারতের সঙ্গে বিরাট সাফল্য। অথচ এটা দুই দেশের দু’পক্ষের সফলতা। আর স্থল সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন ভারতের কারণেই দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল, সুরাহা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এক অনুষ্ঠানে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে বলেছেন যে অনেক দিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্য দিয়েই আমরা সেরাটা বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছি এবং সফলও

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সফলতার জন্য আমরা পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছি। সবকিছুই একদিনে হয় না, সময় প্রয়োজন। এই ইস্যুতে বিশ্ব বাংলাদেশের সঙ্গে আছে। এতো সমস্যার মাঝেও আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যা সর্বত্র প্রশংসা পেয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, কৌশলগত কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর আলোচ্য বিষয়ের সবকিছু ওই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি।