ছদ্মবেশী ফেসবুকের যে ফাঁদে পা দেবেন না

ছদ্মবেশী ফেসবুক বার্তায় ক্লিক করা থেকে সাবধান থাকুন।কয়েক দিন ফেসবুকে ঢোকেননি, তাই আপনার সব বার্তা মুছে যাবে—এমন বার্তা মেইলে আসতে দেখলে ওতে ক্লিক করার আগে সচেতন থাকুন। ই-মেইল পাঠিয়ে প্রতারণার বিষয়টি নতুন নয়। অনেক মেইল পরিচিত ই-মেইলের ছদ্মবেশে আসে।

এ ধরনের মেইলগুলোকে স্ক্যাম বলে। এতে এমন কিছু বলা হয়, ই-মেইল ব্যবহারকারী এতে ক্লিক করতে প্রলুব্ধ হতে পারেন। এর প্রধান কৌশল থাকে কৌতূহল কাজে লাগানো, কিছু সুযোগ দেওয়ার কথা বলা ও ভীতি ছড়ানো। সম্প্রতি ফেসবুক নিয়ে নতুন ধরনের স্ক্যাম ছড়িয়েছে। এ মেইল পড়লে মনে হয়, ফেসবুক থেকে তা পাঠানো হয়েছে। এতে এমন কিছু বার্তা থাকে, যাতে বলা হয়—দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ফেসবুকে আসা সব বার্তা মুছে যাবে।

যাঁরা এ ধরনের স্ক্যাম মেইল নিয়ে সচেতন কম থাকেন, তাঁদের আইডি-পাসওয়ার্ড সহজেই হাতিয়ে নিতে পারেন দুর্বৃত্তরা। ছোট ডিসপ্লের স্মার্টফোনের কারণে এ ধরনের স্ক্যাম মেইলে সহজে বোঝা যায় না। স্মার্টফোনে আসা নোটিফিকেশন ও বার্তার মধ্যে সহজে পার্থক্য ধরা পড়ে না। এ সুযোগটি কাজে লাগায় তারা।

সম্প্রতি এমন ই-মেইল আসতে শুরু করেছে, যা ফেসবুকের নোটিফিকেশনের মতো দেখায়। এর বিষয়বস্তু হিসেবে লেখা হয় ‘ইয়োর মেসেজেস উইল বি ডিলিটেড সুন বেয়ার্ড’। এটা স্প্যাম মেইল হিসেবে এলেও এর বিষয়বস্তু কৌতূহল সৃষ্টি করে তাতে ক্লিক করতে প্রলুব্ধ করে।

মেইলের ছদ্মবেশে আসা ওই বার্তায় ফেসবুক থিম ও ফন্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বার্তার ভেতর লেখা থাকে, ‘কয়েক দিন আপনি ফেসবুকে ছিলেন না, আপনার অনুপস্থিতিতে ফেসবুকে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। আপনার বার্তা দ্রুত মুছে যাবে।’ এ মেইলের নিচে ফেসবুকের কাছ থেকে আসা মেইলের মতো তথ্য দেওয়া থাকে।

এই বার্তা দেখতে না চাইলে আনসাবসক্রাইব করার কথা বলা হয়। ওই আনসাবসক্রাইব টেক্সটের সঙ্গে একটি হাইপার লিংক থাকে যাতে ক্লিক করলে মেইলের বাইরের একটি ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়। অনেকে এ ধরনের মেইলে কোনো বার্তা মুছে যাচ্ছে তা দেখার জন্য ক্লিক করেন। ক্লিক করলে কোনো শপিং ওয়েবসাইট বা কোনো বিজ্ঞাপনের পাতায় নিয়ে যায়। সাইবার দুর্বৃত্তরা এটুকুতেই খুশি। কোনো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বা ওয়েবসাইটে ক্লিক বাড়াতে পারলেই তারা অর্থ পায়।

যাঁরা ক্লিক করে বসেন তাঁরা ভাবেন হয়তো ভুল করে ওই সাইটে চলে গেছেন তাই তাঁরা আবার চেষ্টা করেন। আবারও একই কাজ হয়। অন্য লিংকগুলোতে ক্লিক করলেও একই ঘটনা ঘটে। এ ধরনের প্রতারণা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে করার ফলে অনেক ক্লিক পায় ওই ওয়েবপেজ।

এ ধরনের প্রতারণামূলক মেইলে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীর সামান্য ডেটা খরচ হয়। পরে ভুয়া বার্তা ধরতে পেরে তা মুছে অনেকেই তা মুছে দেন বা স্প্যাম মেইল হিসেবে চিহ্নিত করেন। তবে এ ধরনের মেইলের মাধ্যমে যে ওয়েবসাইটে যাওয়া হয় তা ম্যালওয়্যার ভর্তি হতে পারে। পিসি থেকে এ ধরনের সাইটে গেলে পিসি আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত এ ধরনের ভুয়া মেইল এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমান ফিল্টারগুলোতে আটকে যায়।

এ ধরনের মেইল খোলার আগে তা একটু সময় নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা উচিত। মেইলের উৎস মেইল প্রেরকের ঠিকানা ভালো করে দেখে নিতে হবে। ওই লিংকের ওপর রাইট ক্লিক করে নোটপ্যাডে পেস্ট করুন এবং হাইপার লিংক ইউআরএল দেখে নিন। মেইলের উৎস যদি ভুয়া হয়, তবে কৌতূহলের বশেও ওতে ক্লিক করবেন না। তথ্যসূত্র: ডেকান ক্রনিকেল।