ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনে!

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিভাগ এবং হল ছাত্রলীগের একাধিক নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

এছাড়া ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অনেক নেতাই কোটা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন।

সোমবার (৯ এপ্রিল) তারা ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে এবং স্বহস্তে লিখিত দরখাস্তের মাধ্যমে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।

চলমান কোটা আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদধারী একাধিক নেতা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে তারা নিয়মিত কর্মসূচিতেহ অংশগ্রহণ করেন। ৮ এপ্রিল শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় তারাও আহত হন এবং এ ঘটনায় তারা এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া নেতারা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ট্যুরিজম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক অছিবুর রহমান, ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাসান সুজন। এছাড়াও অনেক নেতা ফেসবুকে ছাত্রলীগের হামলার সমালোচনা করেন।

পদত্যাগের ঘোষণাকারী ট্যুরিজম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ছাত্রলীগ জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া সংগঠন। ছাত্রলীগ ডাকসুর ভূমিকা পালন করে। ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকারে কাজ করে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বন্ধু। ছাত্রলীগের ভূমিকা কী দেখা গেল? এই ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ করে কি না জানি না। আমার বঙ্গবন্ধু আলাদা। তাই সজ্ঞ্যানে আমি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আর না, অনেক হয়েছে।

এ বিষয়ে বিজনেস অনুষদ শাখার সভাপতি মো. বোরহান উদ্দীন বলেন, আমি শুনেছি সে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। এখনো পদত্যাগপত্র হাতে পাইনি।

শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক অছিবুর রহমান ৯ এপ্রিল পদত্যাগ পত্রে ব্যক্তিগত কারণের কথা উল্লেখ করেন।

জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, আসলে বিষয়টি আপনারাও জানেন। কোটা সংস্কার সময়ের দাবি। যেহেতু ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য দাবিতে সমর্থন দেইনি এবং আমি যেহেতু কোটা সংস্কারের পক্ষে, তাই পদত্যাগ করেছি।

এছাড়া, কোটা সংস্কার চেয়ে ছাত্রলীগের আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের অনেক নেতাই আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবাল রৌশনীও রয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-গণযোগাযোগ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে নিজের ছাত্রত্ব হারিয়েছেন। তবুও অন্যায়ের সাথে আপোস করেন নাই। আর এখনকার নেতারা পদ হারানোর ভয়ে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর পক্ষে কথা বলতে পারেন না। ছিঃ আমরা না তাঁরই আদর্শ বুকে ধারণ করি!

তিনি লিখেন, অহিংস আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠেছে। যারা হসপিটালে আছে তারা আমাদেরই ভাই-বন্ধু। ক্ষমতা আজীবন থাকে না। এই আন্দোলন কোনো দলের না, এটা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর আন্দোলন।