ছুটির দিনে জমজমাট রাজধানীর ঈদবাজার

নিজের বা প্রিয়জনের জন্য নতুন পোশাক বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে না হলে চলে? ঈদের আগে বিপনিবিতানগুলোতে তাই ঢু দিচ্ছে মানুষ। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলে শুক্রবার এই ভিড় অন্যান্য দিনের তুলনায় ছিল উপচেপড়া। কেনাবেচাও চলছে দেদারসে।

বিক্রেতারা জানান, রোজার প্রায় অর্ধেক এরই মধ্যে চলে গেছে। মাসের শুরুতে বেতন হাতে পাওয়ায় মানুষের হাতে বেশ টাকা পয়সাও আছে। তাই কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। তবে সামনের সপ্তাহে বোনাসের টাকা হাতে পেলে শুরু হবে আসল কেনাকাটা।

দুপুর থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করে রাজধানীর নিউমার্কেটে। বিকাল গড়তে না গড়তেই বাড়তে শুরু করে ক্রেতা সমাগম। বিশেষ করে শাড়ি, থ্রি-পিসের দোকানে তুলনামূলক ভাবে আনাগোনা বেশি দেখা গেছে। অলঙ্কারের দোকানেও ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

তবে নিউমার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আকবর আলী জানান, ‘আজকে থেইকা বেচা বিক্রি ভালো কইরা শুরু হওনের কথা। কিন্তু সকাল থেইকা অহন (দুপুর) পর্যন্ত হাজার দশেক টেকাও বেচবার পারি নাই। কাস্টমার আহে আর কাপড় দেইখা যায়গা। গত কয়েক বছরেও এত কম কাস্টমার দেহি নাই। অহন এমন অবস্থা হইসে লসে পইড়া ৬০০ টাকার মাল ৫০০ টাকায় বেচন লাগতাসে।’

কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হানিফ রহমান বলেন, ‘এখনো পুরোপুরিভাবে কেনাকাটা শুরু করিনি। এখনও তো বেশ খানিকটা সময় রয়েছে কেনাকাটা করার মত। তবে গতবারের তুলনায় এবার বিক্রেতারা পোশাক পরিচ্ছেদের দাম বেশি চাচ্ছে।’

এছাড়াও রাজধানীর চাঁদনি চক ও গাউসিয়া বিপণি বিতান ঘুরে দেখা গেছে, ১০ রমজানের পর ভিড় বেড়ে গেছে ক্রেতাদের। আর ক্রেতাদের এমন পদচারণায় খুশি বিক্রেতারাও। তবে ঈদ উৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রথম দিকে নারী ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা থ্রি-পিস, কামিজ ও শাড়ির বেচাবিক্রি এবার কিছুটা কম বলে জানালেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।

বিক্রেতারা জানান, এবারও ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নাম বলে সেই সব সিরিয়ালের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পরনের পোশাক কিনতে চাইছেন। এর মধ্যে দীপ জ্বেলে যাই, ছদ্মবেশী, সেই ছেলেটা ভেলভেলেটা, জড়োয়ার ঝুমকো অন্যতম। উল্লেখ্য, এসব সিরিয়াল ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোতে বিরতিহীনভাবে প্রচারিত হয় আর এর প্রধান দর্শক প্রায় সব বয়সী নারী।

চাঁদনি চক মার্কেটের শাড়ি ও থ্রি-পিস ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘এখনো পুরোদমে বেঁচাকেনা শুরু হয়নি। ১৫ রোজার পর থেকে ভিড় বাট্টা আরও বাড়বে। তবে কেনার মত ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম বলে জানান তিনি।’

এবারে ছেলেদের পাঞ্জাবির প্রধান আকর্ষণ সুলতান, বাহুবলী, সুলেমান ইত্যাদি। আর এই পাঞ্জাবিগুলো আসে ভারত থেকে। দাম চার হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে এখন পর্যন্ত বাহুবলী পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। দেখতেও সুন্দর। তবে ছবি তুলতে গেলে তিনি জানালেন এই দোকানে ছবি তোলা নিষেধ।

জমে উঠেছে জিন্সের প্যান্টের বাজার। জিন্সে এবার নতুন কোনো স্টাইল আসেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেট ও চাঁদনি চক মার্কেটের পাঞ্জাবি বিক্রেতারা জানান, আগামী দু্ই থেকে তিনদিনের মধ্যে ছেলেদের কেনাকাটা শুরু করবে।