‘জঙ্গিদের মদদ দানকারী রাজনৈতিক শক্তি এখনো বিদ্যমান’

জঙ্গিবাদের অপশক্তির হাত থেকে এখনো বাংলাদেশ মুক্ত নয় বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, জঙ্গিদের মদদ দানকারী রাজনৈতিক শক্তি এখনো বিদ্যমান। একমাত্র জনসচেতনতা ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর রাজনীতির অবসানই হতে পারে এ থেকে মুক্তির উপায়। আর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জঙ্গিরা এখন অনেকটাই কোণঠাসা। তারপরেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক রয়েছেন তারা। ১৭ই আগস্ট দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার ১৪ বছরে দেশের জঙ্গিবাদের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে এ কথা বলেন তারা।

২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট। মুন্সিগঞ্জ বাদে দেশের ৬৩টি জেলায় ১৫ মিনিটের ব্যবধানে ৫০৩টি স্থানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ জেএমবি। ১৯৯২ সালে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করলেও মূলত এই হামলার মধ্য দিয়েই নিজেদের অস্তিত্ব ও সক্ষমতার জানান দেয় সংগঠনটি।

১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে মামলা হয় ১৬১টি। এর মধ্যে ১৪৩টি মামলায় চার্জশিট দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত বিচার শেষ হয়েছে ১২৮টি মামলার। এখনো বিচারাধীন ৩৩টি মামলা। এই ঘটনায় বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয় ১ হাজার ৯৬৭ জন।

১৪ বছরে দেশে জঙ্গিবাদের ধরণ যেমন বদলেছে, বদলেছে তাদের মোকাবিলার পদ্ধতিও। সবকিছু মিলিয়ে জঙ্গিরা কিছুটা পিছু হটলেও এখনো বাংলাদেশ ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার।

তিনি বলেন, যে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছে, এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এত বছর পরও আমরা এই অপশক্তির হুমকি থেকে মুক্তি হতে পারি নাই। তার কারণ এদের পিছনে যে রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে সেটা নির্মূল করা যায়নি।

এদিকে পুলিশ বলছে, ১৭ আগস্টের ঘটনায় ৩০৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ২৭ জনের। দণ্ডপ্রাপ্তদের অনেকেই সাজার মেয়াদ শেষে বের হয়ে এসেছে। নজরদারিতেও রয়েছে তারা। অনেককেই পুনর্বাসনের উদ্যোগও নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, সাজা ভোগ শেষে যারা বের হয়ে এসেছে, তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছি। তারা অনেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে। সে সাথে পুর্নবাসনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।

অব্যাহত অভিযান ও নজরদারির কারণে জঙ্গিরা আপাত কোনঠাসা অবস্থায় থাকলেও এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাঝে কোনো আত্মতৃপ্তি নেই বলেও জানান কাউন্টার টেররিজম ইউনিট প্রধান।