‘জনগণ রাতের আঁধারে দা দিয়ে কার্পেটিং তুলে বলছে রাস্তার কাজ ভাল হয়নি’

রাস্তায় পিচের কার্পেটিং এর কাজ হয়েছে ১৩ দিন। এই ১৩ দিনের মধ্যে কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে। ১৩ দিনের মধ্যে পিচের রাস্তা হতে উঠে যাচ্ছে পাথর। ঝুরঝুরে মাটির মতো একটা একটা হয়ে যাচ্ছে পাথরগুলো। কোথাও কোথাও চাপ চাপ উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। সাতক্ষীরা সদরের ভাদড়া-বাউকোলা সড়কের অবস্থা এটি।

স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন, ৫ জুলাই ভাদড়া বাউকোলা সড়কের পিচের কার্পেটিং এর কাজ শুরু করেন সাতক্ষীরার কাটিয়া এলাকার ঠিকাদার ইনসান বাহার বুলবুল। ওইদিনই রাস্তার কাজ ভাল না হওয়ায় আমরা বাঁধা দেয়। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কোনরুপ কর্ণপাত না করে নিজেদের ইচ্ছামত কাজ করে গেছেন। রাস্তায় কার্পেটিং এর সময় ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিনে উপস্থিত থেকে তদারকি করার কথা থাকলেও সেখানে কোন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেননা। কার্যকরি সহকারি শামিম হোসেন ও ইলেকট্রিশিয়ান হান্নান রাস্তার কাজের তদারকি করেছেন। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার শফিউল আযম ও উপ-সহকারি ইঞ্জিনিয়ার মামুনের যোগসাজসে ঠিকাদার নামকিওয়াস্তে পিচ দিয়ে রাস্তায় পিচের কার্পেটিং করেছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো বলেন, ইঞ্জিনয়াররা ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে রাস্তার দিকে খেয়ালই করেননি। কার্যকরি সহকারি ও ইলেকট্রিশিয়ান রাস্তার দেখভাল করেছে। তারা রাস্তার কাজের কি বোঝে। এই বর্ষা যেতে না যেতেই ওই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে এত খরচ করে ওই রাস্তা ঠিক করার কি দরকার ছিল? সরকারের টাকাগুলো একেবারে জলে যাচ্ছে।

এ দিকে কুশখালী ইউনিয়নের চেয়রম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল এ ব্যাপারে বলেন, রাস্তা ভাল না হওয়ার বিষয়টি জনগন আমাকে বললে আমি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছিলাম। তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর দেখি রাস্তার অবস্থা খুবই বেহাল। আমি শুনেছি ১০০ কেজি পাথরে ৪ কেজি পিচ দিয়েছে। আর পাথরে তাপ দিয়েছে ৩৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অভিযোগ করে ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, ইঞ্জিনিয়ার মামুন সাহেব একজন একের ঘুষখোর হয়ে গেছে। ঘুষ খেয়ে খেয়ে তার পেট ভরে গেছে। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের অজান্তে ঠিকাদারের কাছ থেকে বড় অংকের ঘুষ নিয়ে তিনি এই আকামে সহায়তা করেছেন। এমন কোন প্রকল্প নেই যে প্রকল্পের ইস্টিমেট ও প্রত্যয়ন দিতে ৫ হাজারের অধিক ঘুষ দিতে হয় না। আমরা রাস্তার বিষযটি উর্দ্ধতন মহলকে জানাবো। আশা করছি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুদৃষ্টিতে দেখবেন।

তবে উপসহকারি প্রকৌশলী(নকশাকার) এম এ মামুন আলম বলেন, রাস্তার কোন সমস্যা নেই। আমি সরেজমিনে থেকে রাস্তার তদারকি করেছি। এছাড়া ঠিকাদারের কাছ থেকে কোন ঘুষ নেওয়া হয় নি।

তবে সকল দোষ জনগনের জানিয়ে ঠিকাদার ইনসান বাহার বুলবুুল বলেন, আমরা সঠিকভাবে রাস্তার কাজ করেছি। জনগন রাতের আঁধারে হেসু ও দা দিয়ে খুড়েছে। এখন তারা বলছে রাস্তার কাজ ভাল হয়নি।

তিনি এক জনপপ্রতিনিধির ভাই জানিয়ে দম্ভভরে বলেন, উমুক আমার ভাই। আমি আওয়ামীলীগ করি। আমার কাজ সবসময় সঠিক হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার শফিউল আযম বলেন, ভাদড়া টু মৃগীডাঙ্গা রাস্তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে ১ বছরের মধ্যে রাস্তার যদি কোন সমস্যা হয় তবে ঠিকাদার তা ঠিক করে দেবে।

এছাড়া ঠিকাদারের সাথে আমাদের কোন দেনদরবার হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বচ্ছভাবে কাজ করছি। ঠিকাদারের সাথে কোন প্রকার দেনদরবার করার প্রশ্নই ওঠেনা।