জাতিসংঘে ট্রাম্পের প্রথম ভাষণে কী থাকছে

প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ প্রথমবারের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মতো বিশ্বমঞ্চে ভাষণ দেবেন তিনি। বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জাতিসংঘে ভাষণের বিষয়টি খোদ যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এএফপি বলেছে, এমনকি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ট্রাম্পের এ ভাষণ তার পূর্বসূরিদের চেয়েও বেশি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হতে পারে।

ইউএসএটুডে বলেছে, নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এতে জাতিসংঘের সংস্কার প্রশ্ন এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের প্রশ্ন প্রাধান্য পাবে। টেলিগ্রাফ বলেছে, ভাষণে নিজের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সিএনএন জানায়, সাধারণ পরিষদে নিজের ভাষণে ট্রাম্প তার ‘আমেরিকা প্রথম’ মার্কিন সংরক্ষণবাদী নীতির পক্ষেই অবস্থান নেবেন। তবে ইরান ও উত্তর কোরিয়া ইস্যু প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অচলাবস্থার ব্যাপারে নিজের অবস্থান নিয়ে উন্মুক্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন তিনি। এএফপি জানায়, ট্রাম্প তার ভাষণে উত্তর কোরিয়াকে টার্গেট করবেন নিশ্চিত। কেননা দেশটি পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির মাধ্যমে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সমান’ হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নিলেও এ ব্যাপারেও ট্রাম্প নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর গত ৮ মাসে উত্তর কোরিয়া ও ইরানের ব্যাপারে অনেক উত্তেজনা ছড়িয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মতো শত্রু হিসেবে চিহ্নিত দেশগুলোও তার এ বক্তব্যের বুঝতে চাইবে, বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বমঞ্চে তার ভবিষ্যৎ অবস্থান কেমন দেখতে চাচ্ছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, ‘বিশ্ব সম্পর্কে তার বক্তব্য কি তা শুনতে তারা সবাই খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে আছে। আমি মনে করি, তার এ ক্ষেত্রে তিনি বেশ প্রভাব ফেলবেন।’ নিকি হ্যালি এরই মধ্যে ট্রাম্পের ভাষণের একটি খসড়া পড়েছেন। হ্যালি বলেন, ভাষণে তিনি ‘ঠিক লোকগুলোকেই’ চড় দিয়েছেন এবং ঠিক লোকগুলোরই প্রশংসা করেছেন।’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ট্রাম্প জাতিসংঘকে ‘পুনর্মিলনী ও আড্ডা দেয়ার ক্লাব’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এর আগে জাতিসংঘের অনেক বিষয়ে উন্নীত করার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। চলতি বছরের এই বিশ্ব সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ১৩০টি দেশের নেতারা। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও প্রতিপক্ষরা সবাই চিন্তিত। ওই নীতির আলোকে জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় আর্থিক জোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা কমিয়ে দেয়ার ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়েছে।