জাতিসংঘ কমিটিতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জয়ী বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব

জাতিসংঘ সদরদফতরে অনুষ্ঠিত কমিটি অন দ্যা রাইটস অব অল মাইগ্রান্ট ওয়াকার্স অ্যান্ড মেম্বারস অব দেয়ার ফ্যামিলিজের (সিএমডব্লিউ) সদস্য হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রার্থী পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক।

গতকাল এ ফলাফল ঘোষণা হয় বলে জানিয়েছে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশের আবাসিক মিশন।

২০১৮-২০২১ মেয়াদের নির্বাচনে ৫১ ভোটের মধ্যে ৪৬ ভোট পেয়েছেন শহীদুল হক। সিএমডব্লিউয়ের এই নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর এটাই সর্বাধিক ভোট।

এই বিজয় বাংলাদেশের বলিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতির প্রতি বিশ্ববাসীর আস্থার প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে। পররাষ্ট্র সচিব চার বছর মেয়াদি এই কমিটিতে একজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করবেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথমবারের মতো অভিবাসীদের অবৈধ পাচার রোধকল্পে একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত ‘গ্লোবাল মাইগ্রেশন কমপ্যাক্ট’ প্রণয়নের জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাব ২০১৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

গ্লোবাল কম্প্যাক্ট তৈরির বিষয়ে জাতিসংঘে এখন আনুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশ নিউইয়র্ক ও জেনেভায় জাতিসংঘের গ্রপ অব ফ্রেন্ডস্ অব মাইগ্রেশনের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং অত্যন্ত সক্রিয় সদস্য হিসেবে জাতিসংঘে অভিবাসন বিতর্কে অংশগ্রহণ করছে।

বাংলাদেশ মিশন জানায়, বাংলাদেশ এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সিএমডব্লিউয়ের সদস্য হলো, যা আমাদের ৯ মিলিয়ন অভিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ বিশ্বব্যাপী অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষা ও উন্নয়নে একটি নতুন মাত্রা যোগ করল। এটি নিঃসন্দেহে অভিবাসন ইস্যুতে জাতিসংঘ ও এর বাইরে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার সুস্পষ্ট স্বীকৃতি।

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অব দ্যা রাইটস অব অল মাইগ্রেন্ট ওয়াকার্স অ্যান্ড মেম্বারস অব দেয়ার ফ্যামিলিজের (আইসিআরএমডব্লিউ) ৫১টি দেশ পরবর্তী ৪ বছরের জন্য সিএমডব্লিউয়ের নতুন ৭ জন বিশেষজ্ঞ নির্বাচিত করেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে নির্বাচিতরা কাজ শুরু করবেন।

সিএমডব্লিউয়ের ১৪ সদস্যের পরিষদ আইসিআরএমডব্লিউয়ের দেশগুলোর অভিবাসী কর্মীদের মানবাধিকার রক্ষা এবং সিএমডব্লিউয়ের সদস্য নয় এমন দেশগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনীয় চুক্তি স্বাক্ষরসহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে কাজ করে। বাংলাদেশ ২০১১ সালের ২৪ আগস্ট সিএমডব্লিউয়ের চুক্তি অনুস্বাক্ষর করে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে এই কমিটিতে আলবেনিয়া, শ্রীলঙ্কা, কলম্বিয়া, আজারবাইজান, সেনেগাল ও নাইজারের প্রার্থীরাও নির্বাচিত হয়েছেন।

অভিবাসনের একজন খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত শহীদুল হক ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) সদর দফতরে ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যান্ড পার্টনারশিপ পরিচাল হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

তিনি ২০১৬ মেয়াদে গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (জিএফএমডি) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ‘গ্লোবাল কম্প্যাক্ট’ ধারণাটি এগিয়ে নিতেও তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন।