জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু নির্বাচন চায় না ছাত্রলীগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যত দ্রুত সম্ভব ডাকসু নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছে। তবে তাদের এই দাবির বিরোধিতা করেছেন অন্য ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

রোববার দুপুরে উপাচার্য কার্যালয়সংলগ্ন অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান। শেষ হয় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (দুটি অংশ) এই আলোচনায় অংশ নেয়।

আলোচনার এক ফাঁসে ছাত্রলীগ নেতা সনজিত চন্দ্র দাস সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাকসু একটি জাতীয় ইস্যু। এটা কোনো ছোট বিষয় নয়। দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে বন্ধ থাকা এই নির্বাচন কয়েক মাসের মধ্যে করা সম্ভব নয়। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরে যত দ্রুত সম্ভব ডাকসু নির্বাচন করা হোক।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন চেয়ে আসছি। দ্রুত ডাকসু নির্বাচন করা হোক। নভেম্বরের মধ্যে হলে ভালো হয়।’

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, ‘আমরা দ্রুত ডাকসু নির্বাচন চাই। জাতীয় নির্বাচনের আগে হোক বা পরে হোক। ডাকসু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের আন্তরিকতা খুবই প্রয়োজন।’

গত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পাঠানো হয়। কর্তৃপক্ষ কয়টি সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, তা নির্দিষ্টভাবে বলেনি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য ক্রিয়াশীল সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরকে গত ৪ সেপ্টেম্বর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এরপরও নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর ওই তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। এর পরই কর্তৃপক্ষ ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা আহ্বান করেছে। এ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, এটি বাধ্যবাধকতার সভা।