জাবালে নূর ও সুপ্রভাত বাসের নিষেধাজ্ঞা কতদিনের?

রাজধানীতে বাসের দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনার পর বিক্ষোভের জের ধরে ঢাকা মহানগরীতে সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের সব বাস মিনিবাস চলাচল নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএ।

বিআরটিএ’র উপপরিচালক শফিকুজ্জামান ভূঞার সাক্ষর করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে, এই দুই বাসের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই দুটো বাস ঢাকার রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না।

ঢাকার নদ্দা এলাকায় মঙ্গলবার সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস বিইউপির- এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আগামী তিন দিনের মধ্যে কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিআরটিএ-র ইঞ্জিনিয়ারিং উইং এর উপপরিচালক শফিকুজ্জামান ভূঞা বলেছেন, “এই দুটো পরিবহন নিয়ে কমপ্লেইন (অভিযোগ) আসছে, এই কারণে তাদের চলাচল আপাতত স্থগিত রাখছি।”

“তাদের যত কাগজপত্র আছে তিনদিনের মধ্যে সাবমিট করতে হবে, সেগুলো চেক করা হবে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাদের চলাচলের বিষয়ে।”

এর আগে গতবছর জুলাই মাসে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর জাবালে নূর একটি মাত্র গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছিল। এবার সবগুলোকেই অস্থায়ীভাবে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে জানান বিআরটিএ-র কর্মকর্তা মিস্টার ভূঞা।

রুট পারমিট বাতিল হলে বাস চলাচল বন্ধ হবে?

তবে অনেকের মাঝেই সংশয় কাজ করছে- রুট পারমিট বাতিল হলেও প্রকৃতপক্ষেই এ ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হবে কি-না?

কেননা এর আগে কোনও কোনও পরিবহনের পারমিট বাতিল হলে তা অন্য নাম নিয়ে রাস্তায় মেনেছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর এসেছে। এবারও সুপ্রভাত বাসটি অন্য নাম নিয়ে আবার রাস্তায় নামানোর প্রস্তুতি চলছে-এমন খবর ও ছবি এরিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে বিআরটিএ-র এই কর্মকর্তা বলেন, “মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় এবং পুলিশের পক্ষ থকে ট্রাফিক বিভাগ কাজ করে। চেকিং এ পড়লে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। রুট পারমিট পাওয়ার সুযোগ নেই।”

কিন্তু রাস্তায় এখনো এ ধরনের যে গাড়িগুলো চলছে, সেগুলোর ব্যাপারে তাদের নজরদারি কতটা আছে?

এ প্রশ্ন মিস্টার ভূঞা জানান, ” এ বিষয়ে আমাদের মোবাইল কোর্ট রয়েছে। ট্রাফিক বিভাগ কাজ করছে।”

তাহলে তারপরও এগুলো চলছে কিভাবে – জানতে চাইলে মিস্টার ভুঞা বলেন, এখন এসব বিষয়ে কড়া নজর দেয়া হচ্ছে।

গতবছরের জুলাই মাসে ঢাকা বিমানবন্দর সড়কে বাস-চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টানা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা, পরবর্তীতে তা ব্যাপক জনসমর্থনও পায়।

ওই সময় জাবালে নূরের দুটি বাসের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছিল। আর মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার পর ওই বাসের নিবন্ধন বাতিল করা হয়।

বিআরটিএ-র চিঠিতে যা বলা আছে

দুই বাসের রুট পারমিট বাতিল করে বিআরটিএ-র চিঠিতে বলা হয়, বুধবার থেকে রাজধানীতে ঢাকা মহানগরীর উত্তরা রানীগঞ্জ থেকে সদরঘাটে চলাচলকারী সুপ্রভাত প্রাইভেট লিমিটেডের সব বাস ও মিনিবাস এবং ঢাকা মহানগরীর বসিলা থেকে আব্দুল্লাহপুরে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহন লিমিটেডের সব বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই দুটো বাস ঢাকার রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না।