জামায়াতের ২৫জনের প্রার্থিতা তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া জামায়াত ইসলামীর ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল পূর্বক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে চারব্যক্তির করা আবেদন তিনদিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ নির্দেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।

এর আগে গতকাল সোমবার জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি হয়ে। শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত তা মুলতবি করেন আদালত।

রিট আবেদনটি করেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, মো. আলী হোসেন, মো. এমদাদুল হক ও হুমায়ুন কবির। রিটে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ২২ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনজন জামায়াত প্রার্থীর ভোটে অংশগ্রহণের ওপর স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়।

আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে। এছাড়া জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করতে রুল জারির প্রার্থনা করা হয়েছে। রুলে বিচারাধীন থাকাবস্থায় বৈধ প্রার্থী হিসেবে ইসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্থগিত চাওয়া হয় রিটে।

সোমবারের শুনানিতে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৯ সালে রিট করা হয়। পরে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। ওই রায়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) এবং ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধানপরিপন্থী। রায় এখনও বহাল।

তিনি বলেন, যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধন নেই সেহেতু ওই দলের কোনো নেতা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে পারছেন না। অন্য দলের প্রতীকেও তাদের ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এর পরেও জামায়াতের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে ইসি হাইকোর্টের রায় ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের বিভিন্ন বিধির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, জামায়াতের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব ইসির। কমিশনের কাজ আমরা করব না। আমরা শুধু রুল জারি করতে চাই।পরে হাইকোর্ট আজ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতের ২২ জন নেতা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এরা হলেন ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা-৬ আসনে আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, খুলনা-৫ আসনে মিয়া গোলাম পরোয়ার, কক্সবাজার-২ আসনে হামিদুর রহমান আযাদ, পাবনা-৩ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আসনে আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ আসনে আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, নীলফামারী-২ আসনে মো. মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ-৩ আসনে মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট-৩ আসনে ওয়াদুল শেখ, বাগেরহাট-৪ আসনে আবদুল আলীম ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।