জিতলো এমপি মাশরাফির রংপুর

ক্রিকেট সুপারস্টারের খ্যাতি কাজে লাগিয়ে প্রথম বারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু মাশরাফির নির্বাচনী ময়দানের সেই জয় আনন্দ ক্রিকেট মাঠে এসেই ম্লাণ হয়ে যায়। এবারের বিপিএলের প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় মাশরাফির রংপুর রাইডার্স। তবে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিয়েছে মাশরাফির দল। আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইটান্সকে ৮ রানে হারিয়েছে রংপুর।

প্রথমে ব্যাট করে রংপুরের করা ৩ উইকেটে ১৬৯ রানের জবাবে খুলনা ৫ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৬১ রান। হার সব সময়ই তেতো। তবে আজকের এই হার খুলনাকে একটু বেশিই পুড়ানোর কথা। কারণ, ১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তাদের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত।

আইরিশ ওপেনার পল স্টার্লিং ও জুনায়কে সিদ্দিকী উদ্বোধনী জুটিতেই তুলে ফেলেন ৯০ রান। সেটাও মাত্র ১১ ওভারে। শেষ ৯ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৮০ রান। হাতে ছিল পুরো ১০ উিইকেট। খুলনার জয়টাকেই তখন ম্যাচের নিয়তি মনে হচ্ছিল। কিন্তু সহজ এই হিসাবটাই মেলাতে পারল না খুলনা।

৩৩ বলে ৩৩ রান করা জুনায়েদ সিদ্দিকী আউট হতেই আসলে পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র। রংপুরের বোলাররা চেপে ধরে খুলনার ব্যাটসম্যানদের। ফল, ৯০ থেকে ১০৮ রানে যেতে আরও দুই উইকেট হারায় খুলনা। তবে খুলনার সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হয়েছে পল স্টার্লিং আউট হওয়ায়।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে মাত্র ৪৫ বলেই ৬১ রান তুলে ফেলেছিলেন। খুলনাকে জয়ের পথ দেখাচ্ছিলেন মূলত তিনিই। কিন্তু এমপি মাশরাফির তা একদমই পছন্দ হয়নি। পল স্টার্লিং নামের কাটা তাই উপড়ে ফেলেন তিনিই। নিচু লেন্থের শর্ট বলে গুড়িয়ে দেন স্টার্লিংয়ের স্টাম্প। বলতে পারেন স্টার্লিংয়ের এই আউটই ছিল রংপুরের জন্য সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট।

এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ একপ্রান্ত দিয়ে চেষ্টা করলেও অন্য প্রান্তে আরিফুল হক ঠিকমতো শটই খেলতে পারছিলেন না। ফলে খুলনার আস্কিং রানরেট ক্রমেই বেড়ে শেষ দিকে তা ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। মাহমুদউল্লাহর আউটে সেটা আরও বেশি অসম্ভব হয়ে পড়ে।

সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেননি জহিরুল, কার্লোস ব্রাফেটরা। শেষ পর্যন্ত দৌড়িয়েও তাই খুলনা থেমেছে জয় থেকে ৯ রান দূরে। মাহমুদউল্লাহ ১৭ বলে ২৪, আরিফুল ১৩ বলে ১২, জহিরুল ৮ বলে অপরাজিত ১২ ও ব্রাফেট ৪ বলে অপরাজিত ৬ সরান করেন।

এর আগে খুলনাকে ১৬৯ রানের পুঁজি এনে দিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রোসো। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে ৫২ বলে অপরাজিত ৭৬ রান করেন। এছাড়া ইংলিশ অলরাউন্ডার রবি বোপারা ২৯ বলে অপরাজিত ৪০, মোহাম্মদ মিঠুন ১৭ বলে ১৯, অ্যালেক্স হেলস ৯ বলে ১৫ ও মেহেদী মারুফ ১৩ বলে ৫ রান করেন।

দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকান রাইলি রোসোরে হাতে। তবে রংপুরের এই জয়টি এক অর্থে অধিনায়ক মাশরাফির জাদুরই ফসল। সবচেয়ে বড় কাটা হয়ে উঠা পল স্টার্লিংকে আউট করেছেন তিনি। পরে আরেক বিপদের কাটা মাহমুদউল্লাহকেও বিদায় করেছেন দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে। ম্যাচসেরার পুরস্কার না পেলেও এমপি মাশরাফির কাছে জয়ের স্বাদটা অতি মধুরই লাগার কথা। এমপি হিসেবে এটাই যে তার প্রথম জয়।