জীবন বাঁচাতে গির্জায় মুসলিমরা

মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে খ্রিস্টান ও সর্বপ্রাণবাদ মিলিশিয়া বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে দেড় হাজার মানুষ একটি ক্যাথলিক গির্জায় আশ্রয় নিয়েছেন যাদের অধিকাংশই মুসলিম।

মধ্য মে’র সহিংসতার ঘটনায় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বাঙ্গাসোউ শহরের একটি ক্যাথেড্রালে আশ্রয় নেন বাস্তুচ্যুত এসব মানুষ।

গির্জার যাজক ফাদার অ্যালেন ব্লেইস বিসিয়ালো বলেন, ‘এখন থেকে চলে যাওয়ার মতো নিরাপদ পরিস্থিতি নেই। তাই তারা এখান থেকে যেতে পারছে না।’

তিনি বলেন, ‘শহরে বহু বন্দুকধারী ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

গত ১৩-১৭ মে মূলত খ্রিস্টানদের নিয়ে গঠিত অ্যান্টি-বালাকা মিলিশিয়া বাহিনী বাঙ্গাসোউ’র মুসলিম অধ্যুষিত টোকোয়ো জেলায় সিরিজ হামলা চালালে এ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়।

হামলা থেকে বাঁচতে অধিবাসীরা পার্শ্ববর্তী মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানেও হামলা চালানো হয় এবং শেষ পর্যন্ত মসজিদের ইমামকেও হত্যা করা হয়।

বেসামরিক লোকদের বাঁচাতে ক্যাথলিক বিশপ টোকোয়ো জেলায় ট্রাক পাঠান যাতে যত বেশি সংখ্যক বেসামরিক লোককে গির্জায় নিয়ে আসা যায় সেজন্য।

শুক্রবার রেডক্রসের স্থানীয় শাখার প্রেসিডেন্ট অ্যান্তোইনে এমবাউ বোগো আলজাজিরাকে বলেন, ‘সর্বশেষ হিসেবে অনুযায়ী মধ্য মে’র ওই সহিংসতায় ১৫০ জন নিহত হয়েছেন। তবে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

গির্জায় আশ্রয় নেয়া আলিদোউ জিব্রিল বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। একটি জায়গায় এভাবে দিনের পর দিন থাকা, বের হতে না পারা। আমরা না খেয়ে আছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গির্জায় পৌঁছানোর এক সপ্তাহ পর খাবার পেয়েছি। অ্যান্টি-বালাকা এখানে ব্যবসায়ীদের খাবার বিক্রি করতে দিচ্ছে না।’

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ইতিহাস দীর্ঘ। সর্বশেষ মুসলিম নেতৃত্বাধীন সেলেকা যোদ্ধারা ২০১৩ সালে এক অভ্যুত্থানে দেশটির প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে। জবাবে খ্রিস্টান ও সর্বপ্রাণবাদীদের নিয়ে গঠিত অ্যান্টি-বালাকা মিলিশিয়ারা মুসলিমদের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে থাকে।

এরপর ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হন ফস্টিন আরচেঞ্জ টোয়াডেরা। তবে রাজধানীর বাইরে তার তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সেলেকা নামধারী কিছু গোষ্ঠীসহ প্রায় ১৪ গোষ্ঠী বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তারা সড়কের দেখভাল, কর আদায় এবং জনগণকে পুলিশি সেবা দিয়ে থাকে।