জেরুজালেম ছাড়ো, ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশে সৌদি আরব!

ফিলিস্তিনিদের জেরুজালেমের অধিকার ছাড়তে বলেছে ইসরাইলের মিত্র সৌদি আরব। সেই সাথে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য জেরুসালেমের পরিবর্তে অন্য একটি স্থানকে ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসেবে বেছে নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছে আরব রাষ্ট্রটি। অধিকৃত জেরুসালেমের পাশেই ফিলিস্তিনের আবু দিস শহরকে এর রাজধানী হিসেবে বেছে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

তবে সৌদি আরবের এ ধরনের প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের জনগণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জেরুসালেমই আমাদের রাজধানী’ বলে হ্যাশটেগ দেয়া শুরু করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, গত মাসে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের রিয়াদ সফরকালে সৌদি যুবরাজ প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

এ প্রস্তাব অনুযায়ী, পশ্চিমতীর ও গাজা অংশের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা একটি আংশিক রাষ্ট্র পাবেন, যার ওপরে তাদের কেবল আংশিক সার্বভৌমত্ব থাকবে এবং পশ্চিমতীরে ইহুদিরা সংখ্যাগুরু হিসেবে থাকবে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, প্রস্তাবটিতে সাড়া দেয়ার জন্য সৌদি আরব আব্বাসকে দুই মাস সময় দিয়েছে। আবু দিস একটি দখলকৃত পূর্ব জেরুসালেমের কাছাকাছি ফিলিস্তিনি শহর। অসলো চুক্তি অনুসারে এটি বি ক্যাটাগরির একটি এলাকা যা ইসরাইল ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ উভয় দ্বারা পরিচালিত হয়।

এদিকে সৌদি আরবের সরকারে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়েরকে বরখাস্ত করে সেই পদে বাদশাহ সালমানের ছোট ছেলে প্রিন্স খালেদকে বসানো হচ্ছে। আরব বিশ্বের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে খবরটি।

একটি কূটনৈতিক সূত্র সৌদি রাজপরিবারের নতুন এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত করেছে মিডলইস্ট আইকে। এ ছাড়া লেবাননভিত্তিক আল-মাসদার নিউজ গত শুক্রবার এক রিপোর্টে বিষয়টি প্রকাশ করে। তারও আগে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএর বরাত দিয়ে এ খবরটি প্রকাশ করেছে আল ইত্তেহাদ নামে একটি আরবি সংবাদমাধ্যম। তবে এ বিষয়ে সৌদি সরকারের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাদশাহ সালমানের ছেলে ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ছোট ভাই প্রিন্স খালেদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত। এর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের কলম্বাস বিমান ঘাঁটি থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এফ-১৫ বিমানের ফাইলট হিসেবে যোগ দিয়েছেন সৌদি বিমান বাহিনীতে।

বরখাস্ত হওয়া আদেল আল জুবায়ের সৌদি আরবের ইতিহাসে রাজপরিবারের সদস্য নয় এমন দ্বিতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০১৫ সালে তিনি প্রিন্স সৌদ আল ফয়সালের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছে ওয়াশিংটন। ইয়েমেন, কাতার ও লেবানন ইস্যুতে সৌদি আরবকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইয়েমেনের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি সরকারকে। এর প্রতিক্রিয়ায়ই এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।