টিআইবির প্রতিবেদন ‘পূর্বনির্ধারিত মনগড়া’ : ইসি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘গবেষণা প্রতিবেদন’কে প্রত্যাখ্যান করে এটিকে পূর্বনির্ধারিত মনগড়া বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, টিআইবি যে প্রতিবেদনটিকে গবেষণা বলে দাবি করছে, তা কোনো গবেষণা নয়। প্রতিবেদন মাত্র। কেননা, গবেষণা করতে যেসব পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়, তা এখানে প্রয়োগ করা হয়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে মনগড়া প্রতিবেদন। এছাড়া বলা হয়েছে, এটা তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন। তার অর্থই হচ্ছে এই প্রতিবেদন পূর্বনির্ধারিত প্রতিবেদন।

মঙ্গলবার বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, টিআইবি বলেছে গবেষণাটি গুণবাচক, মুখ্য তথ্যদাতার সাক্ষাতকার ও পর্যবেক্ষণ, ক্ষেত্রবিশেষে সংখ্যাবাচক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তথ্য নেয়া হয়েছে পরোক্ষ উৎস থেকে। এভাবে কোনো গবেষণা হয়?

রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটের কারচুপির তথ্য নিলে অবশ্যই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে অথবা লিখিত কোনো ডকুমেন্ট থেকে তথ্য নিতে হবে, এসব করা হয়নি। কোন সোর্স থেকে কী প্রক্রিয়ায় তথ্য নিয়ে তারা বলছে, ভোটের আগের রাতে সিল মারা হয়েছে-এসব কিছু উল্লেখ নেই। কাজেই এটা কোনো গবেষণা হয়নি।

তিনি বলেন, বাছাইকৃত প্রার্থীদের কাছ থেকে তারা তথ্য নিয়েছে বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জামায়াতের প্রার্থীদের কাছ থেকে তথ্য নিলেও গবেষণা প্রতিবেদন এক রকম হবে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের কাছ থেকে নিলে তো আরেক রকম হবে। টিআইবির গবেষণায় এগুলো স্পষ্ট নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই প্রতিবেদন আমলে নিচ্ছি না। যদি গবেষণা হতো তবে আমলে নিতে পারতাম।

এর আগে সকালে সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী সংস্থাটি এক ‘গবেষণাপত্র’ উপস্থাপন করে জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪৭টি আসনের প্রতিটিতে এক বা একাধিক ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৪১ আসনে পড়েছে জাল ভোট। ৩৩ আসনে আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে।

২৯৯ আসনের মধ্যে দ্বৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫০টি আসনে গবেষণা করে এমন তথ্য দেয় টিআইবি। সে মোতাবেক ৯৪ শতাংশ আসনে নির্বাচনী অনিয়ম হয়েছে। জাল ভোট পড়েছে ৮২ শতাংশ আসনে। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্সে সিল মারা হয়েছে ৬৬ শতাংশ আসনে।