ট্রাকচাপায় আহত ফয়সালের পাশে যাত্রী অধিকার আন্দোলন

হামলা করে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা না করে ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন। বুধবার রাজধানীর দনিয়া এলাকায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমে অমানবিকভাবে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী ফয়সাল মাহমুদকে দেখতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল সাংবাদিকদের একথা বলেন।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির গবেষণা সেলের প্রধান নাজমুস সাকিব, মুখপাত্র মাহমুদুল হাসান শাকুরী, সদস্য আবদুল্লাহ আল নোমান, আবদুর রহিম প্রমুখ।

কেফায়েত শাকিল বলেন, গণপরিবহন ব্যবস্থা সংস্কার করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছে, এটা পুরো নগরবাসীর আন্দোলন। এ আন্দোলনে পুরো নগরবাসীর সমর্থন রয়েছে। রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে মানুষ এদের থেকে মুক্তি চায়। তারা নিরাপদ গণপরিবহন চায়। যার বহিঃপ্রকাশ এ গণআন্দোলন।

তিনি আরো বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা আর জনগণের নেই। এটা নিয়ন্ত্রণ করছে একদল সন্ত্রাসী। রাজধানীবাসী এদের থেকে মুক্তি চায়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে না নিয়ে, উল্টো তাদের ওপর হামলা করতে দেখে আমরা অবাক হচ্ছি। আমরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছি এবং দ্রুত তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি করছি।

যাত্রী অধিকার আন্দোলনের এ নেতা আরো বলেন, সিটিং বাসের নামে চিটিংবাজিতে এই শহরের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। সিটিং বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও যাত্রী সেবার মান বাড়ায়নি। এরা সিটিং নাম করে দ্বিগুণ যাত্রী বহন করে, শিক্ষার্থীদের বাসে তুলে না। নির্দিষ্ট স্থান থেকে যাত্রী উঠানোর কথা থাকলেও যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করে। অতিরিক্ত যাত্রী পেতে একে অপরে রেষারেষি করে। যার ফলে প্রতিনিয়ত হতাহতের ঘটনা ঘটেই চলছে। একটি সুশৃঙ্খল পরিবহন ব্যবস্থা থাকলে যা কখনো হতো না। তাই আমরা শিগগিরই সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর দাবি করছি।

আন্দোলনকারীকে ট্রাকচাপা দেয়ার বিষয়ে কেফায়েত শাকিল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় চালকরা ইচ্ছাকৃত চাকার নিচে ফেলে মানুষকে হত্যা করছে। এটা পিস্তলের পরিবর্তে হত্যার আরেকটি অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দ্রুত আইন সংস্কার করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করার দাবি জানান তিনি।

এ সময় তিনি রাজীব ও রোজিনাসহ সম্প্রতি সময়ে বেপরোয়া বাসের চাপায় হতাহতের সব ঘটনার দ্রুত বিচার করা ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।