ট্রাম্পের জন্যে ‘সাহসীকতা পদক’ বানিয়ে পাঠালেন ৩০০ আফগান!

‘অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে’ সাহসীকতার পদকে ভূষিত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে এই সম্মাননা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন ৩০০ জন আফগান। পাকিস্তানের বিষয়ে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক প্রদানের কথা জানায় তারা। রেডিও ফ্রি ইউরোপ রেডিও লিবার্টি (আরএফই/আরএল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

কাবুলের ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত লোগার প্রদেশের ৩০০ জন অধিবাসী ফান্ড গঠনের মাধ্যমে এই পদক বানিয়েছেন। সেখানে লেখার ভাষাটি এরকম- ‘এই সাহসীকতার পদক আফগান মানুষের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য’।

স্থানীয় এক গোত্রের নেতা সাঈদ ফরহাদ আকবরি আরএফই/আরএল-কে জানান, পাকিস্তান বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক মন্তব্য শুনতে গোত্রের সদস্যরা বিগত ১৬ বছর অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাম্প সেই কাজটিই করেছেন।

নতুন বছরের প্রথম দিনে ট্রাম্প টুইটবার্তায় পাকিস্তানকে ভর্ৎসনা করে লিখেছিলেন, গত ১৫ বছর ধরে ৩৩ বিলিয়ন ডলার মার্কিন সাহায্যের বিনিময়ে পাকিস্তান কেবল ‘মিথ্যা আর কপটতা’ দিয়েছে। এই টুইটের পরদিনই মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানের ২ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বাতিল করে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে দৃশ্যমান ভূমিকা না রাখলে এবং নিজেদের ভূমিকে তালেবান ও অন্যান্য সন্ত্রাসবাহিনীর অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া রোধ না করতে পারলে তারা কোনো মার্কিন সহায়তা পাবে না, এমনটাই জানিয়েছেন ট্রাম্প।

আফগানিস্তানের মানুষ সন্ত্রাসবাদের শেষ দেখতে চায়। এ কারণে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই খুশি হয়েছেন। অনেক দিন থেকেই আফগানিস্তানের মাটিতে হামলাকারী বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসবাহিনীকে পাকিস্তান মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে দেশটি।

আকবরি নিজেই প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন বলে জানান। ট্রাম্পের এমন সিদ্ধন্তকে সাধুবাদ জানাতেই অধিবাসীদের দ্বারা গঠিত কাউন্সিলের মাধ্যমে ‘মেডেল অব ব্রেভারি’ বানানো হয়েছে। মেডেলটি বানানো হয়েছে ১৫ গ্রাম সোনা দিয়ে। অতি যত্নে হাতে বানিয়েছেন শিল্পীরা। খরচ পড়েছে ৬৪৫ ডলারের মতো। সামান্য অর্থ হলেও তারা পকেট খালি করে ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানাতে এটা বানিয়েছেন। লোগারের অধিবাসীরা সবাই অর্থ দিয়েছেন।

শনিবার কাবুলে অবস্থিত ইউএস অ্যাম্বেসিতে পদকটি দিয়ে আসেন তারা। মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন আর ব্যাস পদকটি ট্রাম্পের হাতে তুলের দেবেন বলে কথা দিয়েছেন আকবরিকে।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প বিষেদাগার ঢালতে শুরু করেন গত আগস্ট মাস থেকে। তখন তিনি পাকিস্তানকে ‘বিশৃঙ্খলতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টিকারীদের নিরাপদ স্বর্গ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া