ট্রেনে আগুন: ১১ জনের ফাঁসি রদ

ভারতের গুজরাট রাজ্যের গোধরায় সবরমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ১১ জনের সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

বাদী ও বিবাদীদের করা একাধিক মামলা একত্রে করে আপিলের রায়ে সোমবার এ আদেশ দেয় গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি এএস দাভে এবং বিচারপতি জিআর উধারির ডিভিশন বেঞ্চ।

এর আগে নিম্ন আদালত যে ২০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল, তাদের সেই শাস্তি বহাল রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, সরবমতি এক্সপ্রেসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও গুজরাট সরকার এবং রেলওয়েকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রায়ে অবশ্য নিম্ন আদালতের আদেশে মুক্তিপ্রাপ্ত ৬৩ জনের ক্ষেত্রে নতুন করে কোনও নির্দেশ দেয়নি হাইকোর্ট।

২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরায় সবরমতি এক্সপ্রেসে করসেবকদের পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচের অগ্নিকাণ্ডে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়। এদের অধিকাংশ ছিলেন অযোধ্যা থেকে ফেরা করসেবক। ওই ঘটনার পর দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে গুজরাট জুড়ে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের নারকীয় তাণ্ডব শুরু হয় রাজ্যের মুসলমানদের উপর। দাঙ্গার বলি হন ১০৪৪ জন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

ঘটনার তদন্তে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে। গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় একাধিক কমিশনও। গোধরাকাণ্ডের তদন্তে গুজরাট সরকারের গঠিত নানাবতী-মেহতা কমিশন মত দিয়েছিল, ট্রেনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা নয়, এর পিছনে ষড়যন্ত্রের হাত ছিল।

এই ঘটনার ৯ বছর পরে ২০১১ সালের পয়লা মার্চ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গোধরাকাণ্ডে ৩১ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের মধ্যে ১১ জনের ফাঁসির সাজা হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০ জনের। মুক্তি পান অভিযুক্ত ৬৩ জন। শাস্তির রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দোষী সাব্যস্তরা গুজরাট হাইকোর্টে একাধিক মামলা করেন। ৬৩ জনকে বেকসুর খালাসের বিরুদ্ধেও আলাদা মামলা হয়। সব মামলা একত্র করে সোমবার রায় দিল গুজরাট হাইকোর্ট।