ডাকসু নির্বাচনে সাংবাদিকদের ওপর বিধিনিষেধ জারি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নির্বাচনের দিন গণমাধ্যম কর্মীরা অনুমতি ছাড়া কোনো ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন না। রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে তারা কেবল ভোটকেন্দ্রের (সংশ্লিষ্ট হলের) গেস্টরুম পর্যন্ত যেতে পারবেন।

তবে আগে থেকে পরিচয়পত্র নেয়া না থাকলে সেটাও তারা পারবেন না। ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ। টেলিভিশন মাধ্যমের সর্বোচ্চ চারটি ইউনিট এবং প্রিন্ট মিডিয়ার ২ জন সাংবাদিককে পরিচয়পত্র দেয়া হবে।

১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। এ উপলক্ষে বুধবার (৭ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে হল প্রোভোস্টদের একসভায় নির্বাচনের ব্যাপারে আরো বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. এস. এম. মাহফুজুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচনের দিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের সব ফটক সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। কেবল ভোটারসহ ক্যাম্পাসসংশ্লিষ্টরা পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। ফলে সাধারণ জনগণকে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর স্থাপন করা হবে। শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড দেখিয়ে নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। দুপুর ২টার মধ্যে যারা কেন্দ্রে প্রবেশ করবে তাদের সবারই ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটার নিজের আইডি কার্ড দেখিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে প্রার্থীর নামের ডানপাশে নির্ধারিত ঘরে ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বুথ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা রাখা হবে।

নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি প্রবেশপথ (নীলক্ষেত, শাহবাগ ও হাইকোর্ট) বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় থাকবে। এই ৩টি প্রবেশপথ দিয়ে শুধুমাত্র ভোটার ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজ নিজ পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও বাহির হবে। ভোট কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাসযুক্ত যানবাহন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত এই ৩টি গেইট দিয়ে চলাচল করবে। শিক্ষার্থীদের অবাধ চলাচল ও শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ও স্টিকারযুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। ওইদিন সর্বসাধারণকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

নির্বাচনের দিন গণমাধ্যম কর্মীরা চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে ভোটকেন্দ্রের গেস্টরুম/নির্ধারিত স্থান পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারবেন।

ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নির্ধারিতসংখ্যক প্রতিনিধি (পাস পাওয়া সাপেক্ষে) ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত থাকতে পারবেন। আবেদন সাপেক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য সর্বোচ্চ ৪টি ক্যামেরা ইউনিটকে এবং প্রতিটি প্রিন্ট মিডিয়ার সর্বাধিক ২ জন সাংবাদিককে পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে।

পরিচয়পত্র প্রাপ্তির জন্য চিফ রিটার্নিং অফিসার বরাবর আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ২ কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি সংযুক্ত করতে হবে। আগামী ১০ মার্চ রোববার দুপুর ২টার মধ্যে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে।