ডিভোর্স চাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার টিটাগড় রেল স্টেশনে ডিভোর্স চাওয়ায় স্ত্রীকে ধরে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন এক যুবক।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, দুইবছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন মইনুদ্দিন ও আফসানা দম্পতি। কিন্তু স্বামীর অত্যাচারে সেই সম্পর্কে ফাটল ধরে। স্বামীর মারধরে বিরক্ত স্ত্রী বাধ্য হয়ে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আর সেটাই কাল হল তাদের। রাগের মাথায় স্ত্রীকে ধরে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিলেন স্বামী। যদিও এ ঘটনায় মারা যাননি কেউই। তবে দু’টি পা খুইয়েছেন স্বামী। স্ত্রীর চোট তত গুরুতর নয়। দু’জনকেই স্থানীয় আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, গতকাল সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে ব্যস্ততার চেনা ছবি টিটাগড় স্টেশনে। ঠিক তখন দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে এক দম্পতির ঝগড়ায় সকলেই সচকিত হয়ে ওঠেন। বোঝা যাচ্ছিল স্বামী চাইছেন স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে। স্ত্রী নারাজ। ক্রমেই গলা চড়ছিল দু’জনের। ঠিক তখন ডাউন নৈহাটি লোকাল স্টেশনে ঢুকছিল। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্ত্রীয়ের হাত ধরে টেনে লাইনে ঝাঁপ দেন স্বামী। টাল সামলাতে না-পেরে স্ত্রীও লাইনে গিয়ে পড়েন। সকলে চিৎকার করে ওঠেন। দেখা যায় দু’টি পা-ই কাটা পড়েছে স্বামীর। স্ত্রীর পা ভাঙার উপর দিয়ে গিয়েছে। দু’জনকে তড়িঘড়ি ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্বামী-স্ত্রীকে আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আফসানার অভিযোগ, মদ খেলে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না মইনুদ্দিনের। তখন মদের টাকার জন্য বউকে চাপ দিতে থাকে। টাকা না-পেলেই শুরু হয় মারধর। অনেক বুঝিয়েও স্বামীকে শোধরাতে পারেননি আফসানা। বাধ্য হয়েই দুই ছেলেকে নিয়ে ঘর ছাড়েন তিনি। ফিরে যান টিটাগড়ে বাপেরবাড়ি।

বাড়ি ফিরে আসার জন্য বউকে নিয়মিত চাপ দিতেন মইনুদ্দিন। কিন্তু আফসানা ঠিক করেন, কিছুতেই আর স্বামীর ঘর করেবন না। স্বামী দিনের পর দিন রাস্তায় উত্ত্যক্ত করছে দেখে থানায় ডায়েরিও করেছিলেন আফসানা। তাতেও অবশ্য রোখা যায়নি মইনুদ্দিনকে। কাজের প্রয়োজনে আফসানাকে নিয়মিত সোদপুর যেতে হত। তা জানতেন মইনুদ্দিন। মাঝে একদিন টিটাগড় স্টেশনে স্ত্রীর পথ আগলে দাঁড়ান। আফসানা ফিরতে রাজি না-হওয়ায় সেদিন রাস্তাতেই স্ত্রীকে পেটান। এরপর ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে আফসানার। তিনি উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। স্বামীর কাছে ডিভোর্স চান। তাতেই আর মাথা ঠিক রাখতে পারেননি মইনুদ্দিন। রাগের মাথায় আত্মহত্যা করতে যান। সঙ্গে স্ত্রীকেও মারতে চেয়েছিলেন তিনি।