ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও সাধারণ জ্বরের পার্থক্য কী?

বর্তমানে চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাসের কারণে হওয়া জ্বরেও অনেকে ভাবছেন চিকুনগুনিয়া নয়তো? আবার ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গে চিকুনগুনিয়া জ্বরের কিছু মিল রয়েছে বলে এটি নিয়েও দ্বিধা রয়েছে।

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জ্বরের জীবাণুবাহী মশা একই প্রজাতির। দুটোই এডিস মশার কারণে হয়। দুটি রোগের লক্ষণে নানা মিল রয়েছে। আবার ভিন্নতাও রয়েছে।

আর সাধারণ ভাইরাসজনিত জ্বর মশার মাধ্যমে ছড়ায় না। এর লক্ষণ ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া জ্বরের  কাছাকাছি হলেও তারতম্য রয়েছে।

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পার্থক্য  

  • একই মশা দিয়ে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর হলেও ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়। চিকুনগুনিয়া হলে মৃত্যু হয় না।
  • ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে জন্মায় আর চিকুনগুনিয়াবাহী এডিস মশা সাধারণত ময়লা পানিতে বেশি জন্মায়।
  • পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে চিকুনগুনিয়া হওয়ার আশঙ্কা বেশি। আর মাংসপেশিতে ব্যথা হলে ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
  • ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে কাঁপুনি, ঘাম ও রক্তক্ষরণ হয়। তবে চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত এগুলো হয় না।
  • চিকুনগুনিয়াতে হাত-পা ও মুখমণ্ডলে র‌্যাশ হয়। তবে ডেঙ্গু হলে পুরো শরীরে র‌্যাশ হয়।
  • ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের অণুচক্রিকার সংখ্যা অনেক কমে যায়। তবে চিকুনগুনিয়ায় রক্তের অনুচক্রিকার সংখ্যা ততটা কমে না।
  • একই ব্যক্তির শরীরে ডেঙ্গু জ্বর চারবার পর্যন্ত হতে পারে। তবে চিকুনগুনিয়া একবার হলে সাধারণত আর হয় না।
  • ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া জ্বরে সাধারণত ঠান্ডা-কাশি হয় না; নাক দিয়ে পানি ঝরে না। তবে সাধারণ ভাইরাসের কারণে হওয়া জ্বরে এগুলো হয়।
  • সাধারণ ভাইরাল জ্বরে তাপমাত্রা বেশি ওঠে না, শরীরে ব্যথা তুলনামূলক কম থাকে।
  • চিকুনগুনিয়া জ্বরের অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পরও কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে অস্থিসন্ধির ব্যথা জ্বর কমে যাওয়ার পর কমে যায়। চিকুনগুনিয়া জ্বর ভালো হলেও রোগটি অনেকদিন ধরে রোগীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অন্য কোনো ভাইরাল জ্বরে এতটা ভোগান্তি হয় না।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।