ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র নির্বাচনে বাধা নেই

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের শূন্যপদে উপনির্বাচনে স্থগিতাদেশ এবং রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে মেয়র পদে নির্বাচনে আর কোনো বাধা রইল না।

এর আগে গত বছরের গত ৯ জানুয়ারি ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করেন দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।

একজন হলেন ভাটারা ইউপির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান। অপরজন হলেন বেরাইদ ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

রিটের একটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার সচিব ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে বিবাদী করা হয়েছে। আরেকটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

আতাউর রমানের পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আহসান হাবিব ভূঁইয়া। জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী ও মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন সেলিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান।

আইনজীবীরা জানান, গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এখন যিনি প্রার্থী হবেন তিনি কিন্তু জানেন না তিনি ভোটার কিনা।

তাছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে এটা সম্ভব হচ্ছে না।

এছাড়া স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৫ (৩) উপধারা অনুযায়ী ‘মেয়রের পদসহ কর্পোরেশনের শতকরা ৭৫ ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, কর্পোরেশন, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’

এ আইন মতে, উত্তর সিটি কর্পোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি মিলে কাউন্সিলর শতকরা ৭৫ ভাগ হয় না। কারণ নতুন ১৮টিতে তো নির্বাচনই হয়নি।

সে হিসেবে মেয়র পদই তো গঠিত হচ্ছে না। তাছাড়া, সম্প্রসারিত ১৮টি ওয়ার্ডে যারা কাউন্সিলর হবেন তারা কত দিনের জন্য নির্বাচিত হবেন। তারা কি পাঁচ বছরের জন্য হবেন, না আড়াই বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন।

এসব প্রশ্ন রেখেই দুটি রিট করা হয়।

এর আগে ৯ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন (ইসি) ডিএনসিসির মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং নতুন সংযোজিত ১৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।

একই সঙ্গে ওই দিন ডিএসসিসির নতুন সংযোজিত ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে, এবং দুই কর্পোরেশনের ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনেরও তফসিল ঘোষণা করা হয়।

তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ জানুয়ারি, এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

পরে ১৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এছাড়া এ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।